কাশ্মিরে হামলার দায় স্বীকারকারী ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ কারা?
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০২:০৫ এএম
ছবি : সংগৃহীত
জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে ভয়াবহ বন্দুক হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার দায় স্বীকার করেছে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (TRF) নামের একটি কম পরিচিত বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন। ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলার পর এটি ভারতে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এর ফলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে এই সংগঠনটি, যার অতীত কার্যক্রম সম্পর্কে খুব কম তথ্যই জানা ছিল।
দিল্লিভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়া টেররিজম পোর্টালের তথ্যমতে, টিআরএফের আত্মপ্রকাশ ঘটে ২০১৯ সালে। ভারতীয় নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, এই সংগঠনটি পাকিস্তানভিত্তিক কুখ্যাত জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইয়্যেবার (LET) অনুসারী এবং একধরনের ছায়া সংগঠন হিসেবেই কাজ করে।
ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী বলছে, টিআরএফ বিভিন্ন অনলাইন ফোরাম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে “কাশ্মির রেজিস্ট্যান্স” নামে নিজেদের প্রচার করে থাকে। সর্বশেষ পেহেলগাম হামলার দায়ও তারা অনলাইনে প্রকাশ করে।
লস্কর-ই-তইয়্যেবা যুক্তরাষ্ট্রের নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকায় রয়েছে এবং ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলাসহ একাধিক আন্তর্জাতিক হামলার পরিকল্পনার অভিযোগ রয়েছে সংগঠনটির বিরুদ্ধে।
সাউথ এশিয়া টেররিজম পোর্টালের প্রধান আজাই সাহনির মতে, টিআরএফ মূলত লস্করের একটি অঙ্গসংগঠন। তিনি বলেন, “ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (FATF)-এর চাপ মোকাবিলায় এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার অভিযোগ এড়াতে এ ধরনের ছদ্ম সংগঠন তৈরি করা হয়। টিআরএফ তাদের মধ্যে অন্যতম।”
তিনি আরও বলেন, “টিআরএফ হয়তো সামনে থাকছে, কিন্তু মূল অভিযান পরিচালনা করে লস্কর-ই-তইয়্যেবা। পুরো হামলার পরিকল্পনা, অস্ত্র ও কৌশলগত দিকনির্দেশনা এসেছে সেখান থেকেই।”
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সংগঠনটি কাশ্মিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও সাধারণ নাগরিকদের টার্গেট করে হত্যাকাণ্ডের ছক কষে এবং সীমান্ত পেরিয়ে অস্ত্র ও মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত। গত দুই বছর ধরে তারা ভারতপন্থী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে নিয়মিতভাবে অনলাইন হুমকি দিয়ে আসছে বলেও গোয়েন্দা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে পাকিস্তান তাদের ভূখণ্ডে কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর আশ্রয় বা সহায়তা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ইসলামাবাদ বলছে, তারা কেবল কাশ্মিরিদের “নৈতিক ও কূটনৈতিক সমর্থন” দিয়ে থাকে।
সাম্প্রতিক হামলার পর দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিআরএফের মতো ছদ্মবেশী গোষ্ঠীগুলোর উপস্থিতি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।
সূত্র : রয়টার্স।



