Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

ক্ষুধা যেন নতুন অস্ত্র: গাজায় চরম মানবিক সংকট, একবেলার খাবারও জুটছে না

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৩১ পিএম

ক্ষুধা যেন নতুন অস্ত্র: গাজায় চরম মানবিক সংকট, একবেলার খাবারও জুটছে না

ছবি : সংগৃহীত

‘আমার নিজের সামান্য খাবার থেকে প্রায়ই আমার ছেলেকে ভাগ দিতে হয়, এই ক্ষুধাতেই আমি মারা যাবো’—বলেন ৪৪ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হিকমাত আল মাসরি। গাজার বাস্তবতা এখন এমন যে, শিশুরা দিনে একবারেরও কম খাবার পাচ্ছে, আর বাবা-মা নিজেরা অভুক্ত থেকে সন্তানদের মুখে তুলে দিচ্ছেন খাবার।

গত সাত সপ্তাহ ধরে গাজা উপত্যকায় খাদ্যসহ সব ধরনের মানবিক সহায়তা প্রবেশ বন্ধ রেখেছে ইসরায়েল। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে গাজাবাসীর দুর্ভোগ পৌঁছেছে চরমে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গত ২ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।

মানবাধিকার কর্মী ও চিকিৎসকদের মতে, গাজায় বর্তমানে পরিস্থিতি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে বোমার চেয়ে ভয়াবহ হয়ে উঠেছে ক্ষুধা। অন্ধকারে নিমজ্জিত লাখো মানুষ পাননি খাদ্য, পানি কিংবা বিদ্যুৎ—সবচেয়ে সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে জ্বালানি, ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম।

১৮ মার্চ একতরফাভাবে যুদ্ধবিরতি ভেঙে ফের হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। নেতানিয়াহুর প্রশাসনের ঘোষণা—হামাস জিম্মিদের মুক্তি না দিলে কোনো মানবিক সহায়তাই প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। অথচ এই অবরোধকে অনেকেই যুদ্ধাপরাধ বলে বিবেচনা করছেন।

অক্সফামের এক জরিপ অনুযায়ী, গাজার শিশুরা দিনে গড়ে এক বেলারও কম খাবার পাচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, বাজারে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ১,৪০০ শতাংশ। অবরোধের কারণে প্রায় ৪ লাখ ২০ হাজার মানুষকে ঘরছাড়া হতে হয়েছে।

গাজার চিকিৎসাকর্মী আমান্দে বাজেরোল জানান, চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোতে রোগী নেওয়া বন্ধ করতে হচ্ছে প্রতিদিন সকাল ১০টার মধ্যে—ঔষধের মজুত সীমিত হওয়ায়। দেইর আল বালাহে আশ্রয় নিয়েছে বহু মানুষ, কেউ রাস্তায়, কেউবা ধ্বংসস্তূপে তাঁবু টানিয়ে।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েল এখন গাজার প্রায় ৭০ শতাংশ ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ করছে। উত্তর ও দক্ষিণ গাজার মধ্যকার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে তারা। নিরাপত্তা বাফার জোন তৈরির নামে ইসরায়েলের জমি দখলের পরিকল্পনার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এদিকে, ইসরায়েলি বাহিনী অভিযোগ করছে যে, হামাস খাদ্যসামগ্রী আত্মসাৎ করে চড়া দামে বিক্রি করছে, যদিও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে—সাহায্য পৌঁছাতে না দেওয়ার মূল দায় ইসরায়েলের ওপরই বর্তায়।

সবশেষে, গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন বলছে, গাজার মানুষ এখন বিমান হামলার চেয়েও বেশি ভয় পাচ্ছে দুর্ভিক্ষকে। যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা চললেও নিরস্ত্রীকরণ ও সেনা প্রত্যাহারের মতো মূল ইস্যুতে অচলাবস্থা থাকায় মানবিক বিপর্যয় প্রতিহত করার কোনো তাৎক্ষণিক আশাও দেখা যাচ্ছে না।

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন