অদৃশ্য হয়ে যায় প্রেসিডেন্ট রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার
অনলাইন
প্রকাশ: ২২ মে ২০২৪, ০১:১৬ পিএম
প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার
তদন্ত শুরু হয়েছে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনার। সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাগেরি তদন্তের জন্য ইরানের উচ্চপর্যায়ের একটি দলকে নির্দেশনা দিয়েছেন। এরই মধ্যে বিধ্বস্ত ওই হেলিকপ্টারে রেডিও সংকেত পাঠানোর ‘ট্রান্সপন্ডার’ ছিল না বা বন্ধ ছিল বলে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে তুরস্ক।
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি নিহতের তিন দিন পর দুর্ঘটনার বিষয়ে বিশদ প্রকাশ করেছেন কর্মকর্তারা। দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ইরান-আজারবাইজান সীমান্তবর্তী এলাকায় একটি বাঁধ উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে ফেরার পথে ইরানের প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়।
ইরানের প্রেসিডেন্সিয়াল চিফ অব স্টাফ গোলাম হোসেইন ইসমাইলি জানিয়েছেন, ইরানের ভারজাকান অঞ্চলে যেখানে প্রেসিডেন্ট রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়েছিল সেখানের আবহাওয়া প্রায় স্বাভাবিক ছিল। ফ্লাইটটি একদিন আগে শিডিউল করা ছিল এবং যথাসময়ে সেটি উড্ডয়ন করেছিল।
বাঁধ উদ্বোধনের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার সময় ৩টি হেলিকপ্টার একসাথে যাত্রা করেছিল। এই ৩টি হেলিকপ্টারের একটিতে ছিলেন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। এই কনভয়ের দায়িত্বে ছিলেন প্রেসিডেন্টকে বহনকারী কপ্টারের পাইলট।
হোসেইন ইসমাইলি বলেন, দুপুর ১টার দিকে হেলিকপ্টারগুলো উড্ডয়ন করে। স্থানীয় সময় ১৯ মে ওই এলাকার আবহাওয়া স্বাভাবিক ছিল। উড্ডয়নের ৪৫ মিনিটের পর, প্রেসিডেন্ট রাইসির হেলিকপ্টারের পাইলট অন্যান্য হেলিকপ্টারকে উচ্চতা বাড়ানোর নির্দেশ দেন মেঘ এড়ানোর জন্য।
প্রেসিডেন্ট রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি ছিল অন্য দুটি কপ্টারের মাঝে। ইচ্চতা বাড়িয়ে মেঘের উপরে ওঠার পর অন্য দুটি কপ্টার দেখতে পায় প্রেসিডেন্টকে বহনকারী কপ্টারটি তাদের কনভয়ে নেই। সেটি হঠাৎ উধাও হয়ে যায়।
হোসেইন ইসমাইলি বলেন, মেঘের উপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার ৩০ সেকেন্ড পরে, আমাদের পাইলট লক্ষ্য করলেন যে মাঝখানের হেলিকপ্টারটি অদৃশ্য হয়ে গেছে। পাইলট প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টারের সন্ধানে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং বৃত্তাকারে চক্কর কাটেন। নিচে তারা প্রেসিডেন্টকে বহনকারী কপ্টারটি খোঁজার চেষ্টা করেন।
রেডিও ডিভাইসের মাধ্যমে প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টারটির সাথে যোগাযোগ করার বেশ কয়েকটি প্রচেষ্টা নেন তারা। কিন্তু তারা প্রেসিডেন্টকে বহনকারী কপ্টারটির সঙ্গে সংযোগ পাননি। মেঘের কারণে অন্য কপ্টারগুলো নিচে নামতে পারছিল না। ফলে তারা ফ্লাইট চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং নিকটবর্তী একটি তামার খনিতে অবতরণ করেন।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, তবে অন্য দুটি হেলিকপ্টারের পাইলটরা প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টারের দায়িত্বে থাকা ক্যাপ্টেন মোস্তাফাভির সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু যিনি ফোন করেছিলেন তিনি ছিলেন তাবরিজ জুমার নামাজের ইমাম মোহাম্মদ আলী আল-হাশেম, তিনিও তখন গুরুতর আহত ছিলেন।
ইরানের ওই কর্মকর্তা বলেন, যখন আমরা দুর্ঘটনার অবস্থান খুঁজে পাই তখন সেখানে কেউ বেঁচে ছিলেন না। মৃতদেহের অবস্থা নির্দেশ করে যে, প্রেসিডেন্ট রাইসি এবং তার অন্যান্য সঙ্গীরা দুর্ঘটনার পর তাৎক্ষণিকভাবে মারা গিয়েছিলেন।