Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবিতে দেশে দেশে বিক্ষোভ

Icon

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:২২ পিএম

গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবিতে দেশে দেশে বিক্ষোভ

ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যা বন্ধের দাবিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল করেছে হাজার হাজার মানুষ। তারা গাজায় বর্বর হামলা এবং ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের নিন্দা জানিয়েছেন। এ ছাড়া অবিলম্বে গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ এবং সেখানে ত্রাণ ও মানবিক সহায়তার প্রবাহ স্বাভাবিক করার দাবি জানাচ্ছেন।

স্থানীয় সময় শনিবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ এবং ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণার দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মানুষ। এই বিক্ষোভকারীদের মধ্যে মুসলিম, খ্রিস্টানদের পাশাপাশি অনেক ইহুদি শান্তিকামী সংস্থার প্রতিনিধিরাও ছিলেন। 

মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাত দিয়ে তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ব বার্তাসংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, প্যালেস্টাইনিয়ান ইউথ মুভমেন্ট, দ্য পিপল’স ফোরাম, জিউয়িশ ভয়েস ফর পিস, আনসার কোয়ালিশনসহ ৩ শতাধিক সংস্থার উদ্যোগে হয়েছে এই মিছিল। মিছিলটি ওয়াশিংটনের গুরুত্বপূর্ণ সবগুলোর সড়ক প্রদক্ষিণ করেছে।

গাজায় ইসরায়েলের চলমান বর্বরতার বিরুদ্ধে মরক্কোয় ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। গতকাল রোববার হাজারো বিক্ষোভকারী মরক্কোর রাস্তায় নেমে আসেন। গাজায় ইসরায়েলি যুদ্ধের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের বিরুদ্ধেও বিক্ষোভকারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিগত কয়েক মাসের মধ্যে মরক্কোয় সবচেয়ে বড় বিক্ষোভগুলোর একটি হয় গতকাল। এদিন দেশটির রাজধানী রাবাতের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভকারীদের ঢল নামে।

বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েলি পতাকা পদদলিত করেন। তারা ইসরায়েলি হামলায় নিহত হামাস নেতাদের ব্যানার বহন করেন। এ ছাড়া তারা বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের ছবির সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি যুক্ত করে বানানো ক্ষোভের পোস্টারও বহন করেন।

বিক্ষোভকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কারণ, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তা ছাড়া গাজা পুনর্গঠনের জন্য উপত্যকাটি থেকে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক স্থানান্তরের প্রস্তাব দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আরব দেশগুলো এই পরিকল্পনার নিন্দা জানিয়েছে। অধিকার গোষ্ঠীগুলো একে জাতিগত নির্মূলের পরিকল্পনা বলে অভিহিত করেছে। বিক্ষোভকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনপন্থী আন্দোলনের ওপর দেশটির কর্তৃপক্ষের দমন পীড়নেরও নিন্দা জানিয়েছেন।

রাজধানী আঙ্কারাসহ তুরস্কের বিভিন্ন শহরে রোববার একই দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মানুষ। যুক্তরাষ্ট্র  ইসরায়েলকে সামরিক ও রাজনৈতিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখায় আঙ্কারায় মার্কিন দূতাবাসের সামনেও বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। এ সময় তারা ‘জর্ডান নদীর তীর থেকে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত স্বাধীন ফিলিস্তিন চাই’ ‘মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ নিপাত যাক, ইসরায়েলের দখলদারী নিপাত যাক’ ইত্যাদি স্লোগানও দিয়েছেন। এদিকে আজ সোমবার একই দাবিতে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা। বাংলাদেশ প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্স ছিল এই মিছিলের সংগঠক।

বিক্ষোভে ছাত্র-জনতা ইসরায়েলি পণ্য বয়কট ও ফিলিস্তিনকে স্বাধীন করার লক্ষ্যে সবাইকে এক হয়ে লড়াই করার জন্য আহ্বান জানান। এ সময় তারা ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার’, ‘লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই’, ‘দুনিয়ার মুসলিম, এক হও লড়াই করো’, ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর. ইসরায়েল নো মোর’সহ নানা স্লোগান দেন। এছাড়া সারাদেশে একই দাবিতে কর্মসূচি পালন করেন সাধারণ মানুষ।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় অভিযান শুরু করে আইডিএফ। ওই বছর ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।

জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা অভিযান চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী অন্যান্য দেশগুলোর চাপে বাধ্য হয়ে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরায়েল। কিন্তু বিরতির দু’মাস শেষ হওয়ার আগেই গত ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে আইডিএফ। দ্বিতীয় দফার এ অভিযানে গত ১৫ দিনে গাজায় নিহত হয়েছেন ১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। যে ২৫১ জন জিম্মিকে হামাসের যোদ্ধারা ধরে নিয়ে গিয়েছিল, তাদের মধ্যে এখনও অন্তত ৩৫ জন জীবিত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আইডিএফ ঘোষণা দিয়েছে যে সামরিক অভিযানের মাধ্যমে তাদের উদ্ধার করা হবে।

জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে জাতিসংঘের আদালত নামে পরিচিত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও দায়ের করা হয়েছে।  তবে নেতানিয়াহু স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, হামাসকে পুরোপুরি দুর্বল ও অকার্যকর করা এবং জিম্মিদের মুক্ত করা এই অভিযানের লক্ষ্য এবং লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে গাজায়।


Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন