Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

গাজা যুদ্ধবিরতি

বন্দি ও জিম্মি বিনিময়ের নতুন দফা, কিন্তু ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:২৬ এএম

বন্দি ও জিম্মি বিনিময়ের নতুন দফা, কিন্তু ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

বাস থেকে নেমে আসছেন মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনিরা। ছবি : রয়টার্স

গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় ইসরায়েল ও হামাস আবারও বন্দি ও জিম্মি বিনিময় করেছে। সর্বশেষ বিনিময়ের ফলে মোট ১৮ জন ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তি পেয়েছেন, আর ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন ৫৫০ জন ফিলিস্তিনি বন্দি।  

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, হামাস তিন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে, এবং এর বিনিময়ে ইসরায়েল ১৮৩ জন ফিলিস্তিনিকে ছেড়ে দিয়েছে। মুক্তিপ্রাপ্তদের অধিকৃত পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম ও গাজায় পাঠানো হয়েছে।  

১৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া বন্দি-জিম্মি বিনিময়ের পঞ্চম দফা শেষ হয়েছে। তবে এই চুক্তির ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে, বিশেষ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্যের পর।  

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের পর ট্রাম্প জানান, তিনি গাজা দখলে নিতে চান এবং ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র সরিয়ে দিতে আগ্রহী। যদিও পরে তার প্রশাসন এই অবস্থান থেকে কিছুটা সরে এসেছে, তবুও মধ্যস্থতাকারীরা বলছেন, ক্ষতি যা হওয়ার তা হয়ে গেছে।  

হামাস শনিবার সকালে আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির কাছে তিন ইসরায়েলি জিম্মিকে হস্তান্তর করে। এরা হলেন—এলি শারাবি (৫২), ওর লেভি (৩৪) ও ওহাদ বেন আমি (৫৬)। মুক্তির সময় তারা ছিল হামাসের সামরিক শাখা আল কাসাম ব্রিগেডের পাহারায়। মঞ্চে একটি ব্যানারে লেখা ছিল, 

ফিলিস্তিনি বন্দিদের মধ্যেও ছিলেন বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। ২১ বছর কারাবন্দি থাকা হামাসকর্মী ইয়াদ আবু শাখদাম এবং দীর্ঘদিন ধরে আটক রাজনীতিবিদ জামাল আল-তাউইল তাদের অন্যতম।  

দ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায়: চ্যালেঞ্জ ও শঙ্কা

প্রথম পর্যায়ের যুদ্ধবিরতিতে মোট ৩৩ ইসরায়েলি জিম্মি ও প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি মুক্তি পাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক পরিকল্পনার পর দ্বিতীয় পর্যায়ের বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।  

হামাস চায় চূড়ান্ত একটি শান্তি চুক্তি, যেখানে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের নিশ্চয়তা থাকবে। অন্যদিকে, ইসরায়েলি প্রশাসন হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চায়। নেতানিয়াহু রাজনৈতিক চাপে আছেন, কারণ যুদ্ধ একেবারে বন্ধ হয়ে গেলে তার জোট সরকার ভেঙে পড়তে পারে।  

হামাসের হাতিয়ার : শেষ জিম্মিরা

বর্তমানে হামাসের সবচেয়ে বড় কৌশলগত সম্পদ বাকি থাকা ইসরায়েলি জিম্মিরা। ১৬ মাসের যুদ্ধে হামাস ব্যাপক সামরিক সক্ষমতা হারিয়েছে, শীর্ষ নেতারা নিহত হয়েছেন বা আত্মগোপনে আছেন। তাই তারা সহজে জিম্মিদের মুক্তি দিতে চায় না।  

বিশেষত, যদি ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র গাজার ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেয়, তাহলে হামাস আলোচনা থেকে সরে যেতে পারে।  

গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে বিতর্ক

চুক্তির তৃতীয় পর্যায়ে গাজার পুনর্নির্মাণের কথা বলা হলেও মার্কিন কর্মকর্তারা এর বাস্তবায়নযোগ্যতা নিয়ে সন্দিহান। ট্রাম্পের মতে, "গাজা এখন একটি ধ্বংসস্তূপ, এটি আর বসবাসের উপযোগী নয়।" তবে তিনি আবার এটিকে মধ্যপ্রাচ্যের "রিভিয়েরা" বানানোর কথাও বলেছেন, যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ থাকতে পারবে।  

ফের হামলার আশঙ্কা

যুদ্ধবিরতির মেয়াদ ফেব্রুয়ারিতে শেষ হচ্ছে, এবং নতুন কোনো চুক্তি না হলে মার্চে ইসরায়েল আবারও হামলা চালাতে পারে। ইতোমধ্যে ইসরায়েলি অভিযানে ৬১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ১৪ হাজারেরও বেশি নিখোঁজ বলে গণ্য করা হচ্ছে।  

বিশ্লেষকদের মতে, এখনো প্রায় ৭০ জন ইসরায়েলি গাজায় জিম্মি আছেন, তবে তাদের এক-তৃতীয়াংশ সম্ভবত ইতোমধ্যে নিহত হয়েছেন।  

২০২৩ সালের নভেম্বরে এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতিতে ১০০ জনেরও বেশি ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তি পেয়েছিল। তবে ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলায় ১২০০ ইসরায়েলি নিহত ও ২৫০ জন জিম্মি হওয়ার পর থেকেই এই সংঘাতের সূত্রপাত হয়।  

বর্তমানে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা চললেও এতে এখনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে গাজার ভবিষ্যৎ ক্রমশ অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে।

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন