আইএমএফের শর্ত থাকলেও ৩ মাস বিদ্যুতের দাম বাড়াবে না পাকিস্তান
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৪, ১২:৪৬ এএম
আগামী অক্টোবরের আগে পাকিস্তানে বিদ্যুতের দাম না বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ছবি : সংগৃহীত
আগামী অক্টোবরের আগে পাকিস্তানে বিদ্যুতের দাম না বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছেন। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে করা চুক্তির শর্তানুযায়ী বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কথা থাকলেও মানুষকে স্বস্তি দিতে ইসলামাবাদের সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পাকিস্তানের বিদ্যুৎ খাতের অপরিশোধিত ঋণ আইএমএফের জন্য একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। বেড়ে যাওয়া ঋণের রাশ টানা সরকারের জন্য কঠিন হয়ে পড়ছে। অর্থসংকট কাটাতে পাকিস্তান আইএমএফের সঙ্গে আরও একটি চুক্তি করার পরিকল্পনা করছে। চলতি মাসেই ওই চুক্তি হতে পারে বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
গত বছরই পাকিস্তানের সঙ্গে আইএমএফের একটি চুক্তি হয়েছিল। এই কর্মসূচির আওতায় গত ১২ মাসে অনেকবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়। কিন্তু আইএমএফের ওই আর্থিক সহায়তার অংশ হিসেবে যেসব শর্ত পাকিস্তান সরকারকে পালন করতে হয়েছে, তার ধাক্কা দেশটির দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষেরা এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি। গত এপ্রিলে ওই কর্মসূচি শেষ হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা তিন মাসের জন্য জনগণকে স্বস্তি দিচ্ছি—জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর।’ অক্টোবর মাসে সাধারণত তাপমাত্রা কমে, তখন বিদ্যুতের চাহিদাও অনেকটা পড়ে যায়। সরকারের পরিকল্পনা, সে সময়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো, যাতে মানুষের ওপর চাপ বেশি না পড়ে।
গত ১৬ বছরের মধ্যে এই প্রথমবারের মতো পাকিস্তানে বিদ্যুতের বার্ষিক ব্যবহার কমে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। এর মূল কারণ, বিদ্যুতের দাম বাড়ছে এবং এর জেরে বাসাবাড়িতে মানুষ বিদ্যুতের ব্যবহার কমিয়ে দিয়েছে।
শাহবাজ শরিফ বলেন, বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিষয়টি কার্যকর করা পিছিয়ে দেওয়ার ফলে ৯০ শতাংশ বাসাবাড়ি উপকৃত হবে। চলতি গ্রীষ্মে তাপমাত্রা রেকর্ডের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। ফলে পাকিস্তানের ৩০ কোটি মানুষই সমস্যায় রয়েছেন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইএমএফের সঙ্গে আরেকটি চুক্তি স্বাক্ষর করা ছাড়া তাঁর দেশের সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই। ইসলামাবাদ তিন বছরের একটি কর্মসূচি শুরু করতে চায় বলেও তিনি জানান।
১ জুলাইয়ে শুরু হওয়া অর্থবছরের জন্য পাকিস্তান ৪ হাজার ৭০০ কোটি মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ ১৩ লাখ কোটি রুপি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে। এই লক্ষ্য বিদায়ী অর্থবছরের চেয়ে ৪০ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া দেশটি রাজস্ব–ঘাটতি জিডিপির ৫ দশমিক ৯ শতাংশে নামিয়ে আনতে চায়, গত বছর যা ছিল ৭ দশমিক ৪ শতাংশ।
পাকিস্তান যে বাজেট দিয়েছে, তা সম্ভবত আইএমএফকে খুশি করবে। কিন্তু সংকটে থাকা একটি অর্থনীতির চাপে যে সাধারণ মানুষ হিমশিম খাচ্ছেন, উচ্চ কর তাঁদের ক্ষোভ বাড়িয়ে দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।