Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

সিরিয়া থেকে আমার প্রস্থান পরিকল্পিত ছিল না : প্রথম বিবৃতিতে আসাদ

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৪৫ এএম

সিরিয়া থেকে আমার প্রস্থান পরিকল্পিত ছিল না : প্রথম বিবৃতিতে আসাদ

ছবি : সংগৃহীত

দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি পরিকল্পিত ছিল না বলে দাবি করেছেন বিদ্রোহীদের আন্দোলনের মুখে সিরিয়া ছেড়ে রাশিয়ায় পাড়ি জমানো সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। গত ৮ ডিসেম্বর আসাদ নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর সোমবার মস্কো থেকে দেওয়া প্রথম বিবৃতিতে এই দাবি করেছেন তিনি।

বিবৃতিতে বাশার আল-আসাদ বলেন, ‘‘সিরিয়া থেকে তার চলে যাওয়াটা পরিকল্পিত ছিল না এবং হামলার শিকার একটি সামরিক ঘাঁটি থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য মস্কো তাকে অনুরোধ করেছিল।’’ সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের টেলিগ্রাম চ্যানেলে দেওয়া বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘‘সিরিয়া থেকে আমার প্রস্থান পরিকল্পিত ছিল না অথবা লড়াইয়ের শেষ সময়েও এটি ঘটেনি।’’

সিরিয়ার সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘৮ ডিসেম্বর (রোববার) সকালের দিকেই তিনি লাতাকিয়ায় চলে যান। এরপর সেদিন সন্ধ্যায় মস্কো তাকে তাৎক্ষণিকভাবে রাশিয়ায় সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করে।’’ সিরিয়া বর্তমানে সন্ত্রাসীদের হাতে রয়েছে বলে বিবৃতিতে দাবি করেছেন বাশার আল-আসাদ।

বাবা হাফেজ আল-আসাদের মৃত্যুর পর ২০০০ সালে সিরিয়ার ক্ষমতায় আসেন বাশার আল-আসাদ। এরপর প্রায় তিন দশক ধরে শক্ত হাতে শাসন করেন সিরিয়া। দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহীগোষ্ঠীগুলোর দুই সপ্তাহের কম সময়ের সরকারবিরোধী আন্দোলনে গত ৮ ডিসেম্বের বাশারের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটে।

বিবৃতিতে আসাদ বলেন, সিরিয়াজুড়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ছড়িয়ে পড়ায় এবং ৭ ডিসেম্বর (শনিবার) সন্ধ্যার দিকে সন্ত্রাসীরা দামেস্কে পৌঁছানোর ফলে প্রেসিডেন্টের ভাগ্য এবং তার দেশে অবস্থান ঘিরে সংকট তৈরি হয়। ভুল তথ্যের ছড়াছড়ি ও আখ্যানের মাঝে এসব ঘটেছে। যার লক্ষ্য ছিল সিরিয়ার মুক্তি আন্দোলনের নামে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদকে আবারও পুনরুজ্জীবিত করা।

রাশিয়া-ইরানের ঘনিষ্ঠ মিত্র প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনকে অসম্ভব বলে মনে করা হলেও ওইদিন সিরিয়ার ইসলামপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতৃত্বে বিদ্যুৎগতির অভিযানে দেশটিতে সরকারের পতন ঘটে। অতীতে জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পৃক্ত আল-নুসরা ফ্রন্ট নামে পরিচিত ছিল হায়াত তাহরির আল-শাম।

বিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সশস্ত্র সদস্যরা রাজধানীতে ঢুকে পড়ায় তিনি সেদিনই দামেস্ক ত্যাগ করেন বলে জানিয়েছেন। দেশটির লাতাকিয়া প্রদেশে অবস্থিত রাশিয়ার সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রিত হামিমিম বিমানঘাঁটিতে ড্রোন হামলার পরপরই তাকে মস্কোতে সরিয়ে নেওয়া হয়। আসাদ বলেন, তিনি দামেস্ক থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর লাতাকিয়া থেকে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর অভিযানের তদারকি করছিলেন। সেসময় দেশের সব সামরিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছিল বলে স্বীকার করেছেন তিনি।

‘‘আমি রোববার (৮ ডিসেম্বর) ভোর বেলা পর্যন্ত দামেস্কে ছিলাম। সেখান থেকে আমার দায়িত্ব পালন করেছিলাম। সন্ত্রাসী বাহিনী যখন দামেস্কে অনুপ্রবেশ করে, তখন লড়াই অভিযানের তদারকি করার জন্য আমাদের রুশ মিত্রদের সঙ্গে সমন্বয় করে লাতাকিয়ায় চলে আসি। আমি সেদিন সকালেই হামিমিম ঘাঁটিতে পৌঁছাই।’’

বিবৃতিতে বলা হয়, মাঠ পর্যায়ের পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকে। এর এক পর্যায়ে রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটি তীব্র ড্রোন হামলার মুখে পড়ে। সামরিক ঘাঁটির কমান্ড ৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় তাকে তাৎক্ষণিকভাবে রাশিয়ায় সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করে।

এর আগে, সিরিয়ার সাবেক সরকারি পাঁচজন কর্মকর্তা ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছিলেন, বিদ্রোহী বাহিনী দামেস্ক দখল করে আসাদের সরকারের পতন ঘটানোর কয়েক ঘণ্টা আগেই সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দেশের বাইরে চলে যান।

ওই কর্মকর্তারা বলেছেন, এমনকি আগের দিন রাতে বাশার আল-আসাদ তার ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাকে একটি ভাষণ প্রস্তুত করতে বলেছিলেন। কিন্তু দামেস্ক বিমানবন্দর থেকে রাশিয়ার হামিমিম বিমান ঘাঁটি এবং সেখান থেকে দেশের বাইরে যাওয়ার আগে তার আর সেই ভাষণ দেওয়া হয়নি।

বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘‘রাষ্ট্র যখন রাষ্ট্র সন্ত্রাসের কবলে পড়ে এবং অর্থপূর্ণ ভূমিকা রাখার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে, তখন সেখানে যে কারও অবস্থান উদ্দেশ্যহীন হয়ে যায়।’’

সূত্র: এএফপি, রয়টার্স।

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন