পদত্যাগ করেছেন ফরাসি প্রধানমন্ত্রী মিশেল বার্নিয়ে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:২৭ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে পরাজয়ের পর পদত্যাগ করেছেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী মিশেল বার্নিয়ে। প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর কাছে পদত্যাগপত্রও জমা দিয়েছেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র ৩ মাসের মাথায় সরে যেতে হল তাকে।
চলতি বছরের জুন ও জুলাইয়ে ফ্রান্সে আগাম জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে সরকার গঠনের জন্য কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। ফলে রাজনৈতিকভাবে বড় তিনটি ভাগে ভাগ হয়ে পড়ে দেশটির পার্লামেন্ট। নির্বাচনের প্রায় দুই মাস পর গত ৫ সেপ্টেম্বর মিশেল বার্নিয়েকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। কার্যত মিশেল বার্নিয়ের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই ফ্রান্সে রাজনৈতিক অচলাবস্থা চলছিল। দেশের পরবর্তী জাতীয় বাজেট পাস করানো নিয়ে পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে চলতি সপ্তাহে বার্নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব তোলেন বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতারা।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) ফ্রান্সের পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোট অনুষ্ঠিত হয়। তাতে হেরে যান প্রধানমন্ত্রী মিশেল বার্নিয়ে। পার্লামেন্টের ৫৭৭ সদস্যের মধ্যে ৩৩১ জন তার সরকারের বিপক্ষে ভোট দেন। ১৯৬২ সাল থেকে কোন ফরাসি সরকারকে এ ধরনের ভোটের মাধ্যমে জোরপূর্বক ক্ষমতাচ্যুত করা হয়নি। মিশেল বার্নিয়ের ওপর বিরোধী আইনপ্রণেতাদের ক্ষোভের কারণ বিতর্কিত বাজেট বিল পাস করতে অস্বাভাবিক ক্ষমতার প্রয়োগ। সোমবার (২ ডিসেম্বর) বিশেষ ক্ষমতা খাটিয়ে পরবর্তী সামাজিক নিরাপত্তা বাজেট পাস করেন তিনি।
প্রস্তাবিত বাজেটের লক্ষ্য, ৬ হাজার কোটি ইউরো কর বাড়িয়ে এবং ব্যয় কমিয়ে ফ্রান্সের বাড়তে থাকা সরকারি ঘাটতি কমানো। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গেল নভেম্বরে পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, ৬৭ শতাংশ মানুষ এই বাজেটের বিরোধিতা করেন। তবে মিশেল বার্নিয়ে বিশেষ ক্ষমতাবলে পার্লামেন্টে এমপিদের ভোট ছাড়াই পাস করিয়ে নিয়েছেন বাজেট বিল। আর এতেই ঘটে বিপত্তি। দেশটির প্রধান বিরোধী দল ন্যাশনাল র্যালি, এনআর ও বামপন্থি দলগুলো সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের ঘোষণা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এদিকে গভীর রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেয়ার কথা ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুযেল ম্যাক্রোঁর। এলিসি প্রাসাদ জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট সৌদি আরবে রাষ্ট্রীয় সফর শেষে ফ্রান্সে ফিরে এসেছেন।