দারফুর–করদোফানে তীব্র লড়াই
শেষ ঘাঁটি ধরে রাখতে মরিয়া সুদানি সেনাবাহিনী, দ্রুত অগ্রযাত্রায় আরএসএফ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ১২:২৬ পিএম
সুদানের পশ্চিম করদোফান প্রদেশের দারফুর সীমান্তবর্তী এলাকায় শেষ শক্ত ঘাঁটিটি ধরে রাখতে মরিয়া হয়ে লড়াই করছে সুদানের সেনাবাহিনী (এসডিএফ)। অন্যদিকে দারফুরের পূর্বদিকে দ্রুতগতিতে অগ্রসর হয়ে অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দিকে এগোচ্ছে আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ পরিস্থিতি উঠে এসেছে।
গত রোববার সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বারবার হামলার শিকার বাবনুসা শহরের তাদের সদর দপ্তরে আরএসএফের সর্বশেষ আক্রমণটি তারা প্রতিহত করেছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আরএসএফ নতুন করে শক্তি সঞ্চয় করে পূর্বদিকে চাপ বাড়িয়েছে, দারফুরে প্রভাব বিস্তারের পর আবারও বড় আকারে অভিযান শুরু করে। এই অভিযানের মাঝেই ব্যাপক নৃশংসতা ও ভয়াবহ মানবিক সংকটের খবর পাওয়া যাচ্ছে।
শনিবার বাবনুসা শহরের ভেতর থেকে প্রকাশিত বেশ কিছু ভিডিওতে দেখা যায়, আরএসএফ যোদ্ধারা বহু দিক দিয়ে অগ্রসর হওয়ার দাবি করছে এবং শিগগিরই এলাকা ‘মুক্ত’ করার কথা বলছে। ৯–১৩ নভেম্বরের উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বাবনুসায় আরএসএফের হামলায় সেনা স্থাপনাগুলোর বড় অংশ ধ্বংস হয়েছে, সদর দপ্তরের ভেতর থেকে ঘন ধোঁয়া উঠছে। ড্রোন হামলার প্রমাণও শনাক্ত হয়েছে, আশপাশের অবকাঠামোর উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি সেনাবাহিনীর চলাচল সীমিত করে দিয়েছে।
তবে সাম্প্রতিক আরেকটি যাচাইকৃত ভিডিওতে দেখা গেছে, সুদানি সেনাবাহিনীর ২২ তম ডিভিশনের সদস্যরা আরএসএফের ফেলে যাওয়া সাঁজোয়া যান দখল করে উল্লাস প্রকাশ করছে।
আগামী কয়েক সপ্তাহ করদোফান জুড়ে আরও তীব্র লড়াইয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও আঞ্চলিক পক্ষগুলোর যুদ্ধবিরতির আহ্বান উপেক্ষা করে দুপক্ষই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে, উত্তর করদোফানে আরএসএফ কৌশলগত শহর এল–ওবেইদের দিকে এগোচ্ছে—যেখানে রয়েছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানঘাঁটি এবং যা রাজধানী খারতুমের জন্য ঢাল হিসেবে কাজ করে।
সরকারি বাহিনী জানিয়েছে, তারা উত্তর করদোফানের কাজকিল ও উম দাম হাজ আহমেদ এলাকা পুনর্দখল করেছে। একই সঙ্গে দক্ষিণ করদোফানের রাজধানী কাদুগলিকেও লক্ষ্যবস্তুতে রেখেছে আরএসএফ। সামরিক বিশেষজ্ঞ কর্নেল হাতেম কারিম আল–ফালাহি বলেন, করদোফানের এই লড়াই ভবিষ্যৎ সামরিক অভিযানের গতিপথ নির্ধারণ করবে।
তার মতে, বাবনুসার মতো কৌশলগত শহরগুলো ধরে রাখতে সেনাবাহিনী কতটা কার্যকরভাবে প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করতে পারে, তার ওপর নির্ভর করবে সুদানের সামরিক ভারসাম্য। এজন্য সেনাবাহিনী আকাশপথে রসদ পাঠানোসহ প্রতিরক্ষা জোরদারে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে।



