ভেনেজুয়েলায় সামরিক অভিযান নিয়ে সিদ্ধান্তের দ্বারপ্রান্তে ট্রাম্প
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৫৬ এএম
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন যে, তিনি ভেনেজুয়েলায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের বিষয়ে কিছুটা মন স্থির করে ফেলেছেন। সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ সপ্তাহে একাধিক উচ্চ পর্যায়ের ব্রিফিং পাওয়ার পর ট্রাম্প এই অবস্থানে আসেন।
হোয়াইট হাউস ও পেন্টাগন সূত্রে জানা যায়, কর্মকর্তারা ট্রাম্পকে ভেনেজুয়েলার অভ্যন্তরে সামরিক অভিযানের বিভিন্ন বিকল্প তুলে ধরেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে চারটি সূত্র জানিয়েছে, নিকোলাস মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার পরিকল্পনার ঝুঁকি ও সম্ভাব্য সুবিধা নিয়ে ট্রাম্প সক্রিয়ভাবে ভাবছেন।
ইতোমধ্যেই পেন্টাগন অপারেশন সাউদার্ন স্পিয়ার এর আওতায় ক্যারিবীয় অঞ্চলে এক ডজনের বেশি যুদ্ধজাহাজ, প্রায় ১৫ হাজার সেনা সদস্য, একটি ক্রুজার, ডেস্ট্রয়ার, উভচর আক্রমণকারী জাহাজ, ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা কমান্ড জাহাজ, একটি আক্রমণকারী সাবমেরিনসহ ব্যাপক সামরিক উপস্থিতি জোরদার করেছে। বিশ্বের বৃহত্তম বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড আর. ফোর্ডও এ সপ্তাহে ওই অঞ্চলে পৌঁছেছে।
গত শুক্রবার ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন যে তিনি অভিবাসী ও মাদকের অবৈধ প্রবাহ রোধ এবং ভেনেজুয়েলার শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের পদক্ষেপে এগোতে প্রস্তুত। এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকরা সামরিক হামলার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কিছুটা মন তৈরি করেছি—হ্যাঁ। এখনই বিস্তারিত বলতে পারব না, তবে সিদ্ধান্তের কাছাকাছি আছি।
একজন মার্কিন কর্মকর্তা জানান, প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ এবং জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইনের নেতৃত্বে একটি ছোট দল বুধবার ট্রাম্পকে বিস্তারিত ব্রিফিং দিয়েছে। পরে সিচুয়েশন রুমে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওসহ জাতীয় নিরাপত্তা দলের বিস্তৃত বৈঠকেও অপশনগুলো আলোচনা হয়।
ট্রাম্পকে যে বিকল্পগুলো দেখানো হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে—ভেনেজুয়েলার সামরিক ও সরকারি স্থাপনায় লক্ষ্যভিত্তিক বিমান হামলা, মাদক পাচারের রুটে আঘাত এবং মাদুরোকে সরাসরি ক্ষমতাচ্যুত করার প্রচেষ্টা। যদিও এর আগে তিনি সিবিএসের ৬০ মিনিটস অনুষ্ঠানে ভেনেজুয়েলায় হামলা চালানোর পরিকল্পনা নেই বলে মন্তব্য করেছিলেন।
তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন—মাদুরোকে অপসারণের লক্ষ্যে ভেনেজুয়েলার ভেতরে অভিযান চালানো হলে প্রস্তুত ও শক্তিশালী ভেনেজুয়েলান সামরিক বাহিনীর প্রতিরোধের মুখে যুক্তরাষ্ট্রকে কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হতে পারে।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ক্যারিবীয় অঞ্চলে মার্কিন নৌবাহিনীর উপস্থিতি দ্রুত বেড়েছে। ইতোমধ্যে ট্রাম্প প্রশাসন ভেনেজুয়েলার কথিত মাদকবাহী জাহাজে অন্তত ২০টি হামলা চালিয়েছে, যার বেশ কয়েকটিতে প্রাণহানি ঘটেছে।



