বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে তিন নতুন সেনাঘাঁটি স্থাপন করল ভারত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ১২:২২ পিএম
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে নতুন তিনটি সক্রিয় সেনাঘাঁটি স্থাপন করেছে ভারত। কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিলিগুড়ি করিডর বা ‘চিকেনস নেক’ অঞ্চলের নিরাপত্তা জোরদার করতেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসাম-বাংলাদেশ সীমান্তের ধুবড়ির কাছে বামুনি, বিহারের কিশনগঞ্জ এবং পশ্চিমবঙ্গের চোপড়ায় এই তিনটি নতুন সেনাঘাঁটি তৈরি করা হয়েছে। এটি ভারতের পূর্ব সীমান্তে প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধির বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ, যার লক্ষ্য সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো, ট্যাকটিক্যাল ঘাটতি পূরণ করা এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানানোর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
প্রায় ২২ কিলোমিটার প্রশস্ত এই সিলিগুড়ি করিডর ভারতের মূল ভূখণ্ডকে সাতটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত করে। চারদিক থেকে নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ ও চীনে ঘেরা এই অঞ্চলটি ভারতের কৌশলগত দিক থেকে সবচেয়ে সংবেদনশীল এলাকায় একটি।
যদিও অনেকেই চিকেনস নেককে ভারতের দুর্বল অংশ বলে মনে করেন, ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা বরাবরই একে দেশের ‘সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা করিডর’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এক সেনা সূত্র *ইন্ডিয়া টুডে*-কে বলেন, সিলিগুড়ি করিডর বহুস্তরীয় নিরাপত্তাবলয়ে সুরক্ষিত। নতুন ঘাঁটিগুলো আমাদের দ্রুত চলাচল, লজিস্টিকস ও রিয়েল টাইম গোয়েন্দা তথ্য সংহত করার সক্ষমতা আরও বাড়াবে।
এর আগে ভারতীয় সেনাপ্রধানও মন্তব্য করেছিলেন, চিকেনস নেক দুর্বল নয়; বরং এটি আমাদের অন্যতম শক্তিশালী অঞ্চল। পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থানরত বাহিনী একত্রে এখান থেকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে পারে।
বর্তমানে সিলিগুড়ির কাছে সুখনায় অবস্থিত ত্রি-শক্তি কর্পস (৩৩ কর্পস) করিডরের প্রতিরক্ষা তদারকি করছে। আকাশপথে নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে পশ্চিমবঙ্গের হাশিমারা বিমানঘাঁটিতে মোতায়েন রাফাল যুদ্ধবিমান। পাশাপাশি রয়েছে মিগ সিরিজের বিমান ও ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র রেজিমেন্ট।
এছাড়া ভারত এই অঞ্চলে তিনস্তরের উন্নত বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা স্থাপন করেছে। এতে রয়েছে রাশিয়ার এস-৪০০ সারফেস-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র, ইসরায়েল ও ডিআরডিওর যৌথভাবে তৈরি এমআরএসএএম সিস্টেম এবং দেশীয় আকাশ ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা। এই তিন স্তরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব দিক থেকে আসা বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ সুরক্ষা দেবে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এই অঞ্চলে মোতায়েন এস-৪০০ সিস্টেম মূলত চীনসহ অন্য সম্ভাব্য শত্রুপক্ষের বিমান অনুপ্রবেশ ঠেকানোর উদ্দেশ্যে স্থাপন করা হয়েছে।



