Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

নিউইয়র্কের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম মেয়র জোহরান মামদানি

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১১:০৭ এএম

নিউইয়র্কের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম মেয়র জোহরান মামদানি

জোহরান মামদানি

যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শহর নিউইয়র্কে ইতিহাস গড়েছেন জোহরান মামদানি। দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত এই মুসলিম রাজনীতিক শহরটির প্রথম মুসলিম মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন—যা নিউইয়র্কের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় উন্মোচন করেছে।

আল জাজিরা বুধবার (৫ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, প্রায় ৮৪ লাখ জনসংখ্যার এই শহরের নেতৃত্বে উঠে এসে একাধিক মাইলফলক স্পর্শ করেছেন মামদানি। তিনি নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র, প্রথম দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত, এবং প্রথম আফ্রিকাজাত জন্মগ্রহণকারী ব্যক্তি, যিনি এই পদে অধিষ্ঠিত হলেন।

মাত্র ৩৪ বছর বয়সী মামদানি এর আগে নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। মঙ্গলবার রাতে ব্রুকলিনের প্যারামাউন্ট থিয়েটারে তার বিজয় উৎসবের আয়োজন করা হলেও, সোমবারই তিনি সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আপনাদের কারণেই আজ নিউইয়র্কে ইতিহাস রচিত হলো।

বহুজাতি ও বহুধর্মীয় এই শহরের ভোটাররা মামদানির জয়কে অগ্রগতির প্রতীক হিসেবে দেখছেন। তবে তার সমর্থকদের মতে, এটি ধর্ম বা জাতিগত পরিচয়ের নয়; বরং জীবনযাত্রার ব্যয় কমানো ও জনস্বার্থকেন্দ্রিক বাস্তব ইস্যুগুলোর প্রতি মনোযোগী প্রচারণার জয়।

আল জাজিরা বিশ্লেষণে বলছে, এই নির্বাচন যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নতুন দিকনির্দেশনা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো ছিলেন ধনী দাতাদের প্রভাবিত ‘পুরোনো ধারার’ রাজনীতির প্রতীক, আর নিজেকে গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রী হিসেবে পরিচয় দেওয়া মামদানি প্রতিনিধিত্ব করছেন নতুন প্রজন্মের প্রগতিশীল রাজনীতির।

মঙ্গলবার ভোট দিতে গিয়ে কুয়োমো বলেন, এটা ডেমোক্র্যাটিক পার্টির অভ্যন্তরে এক ধরনের গৃহযুদ্ধ—যেখানে সমাজতান্ত্রিক নেতৃত্বাধীন বামপন্থিরা মধ্যপন্থিদের চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে।

 এসেছে পরিবর্তনের আহ্বান। ব্রঙ্কসের সমাজকর্মী জোশুয়া উইলসন (৩৩) বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে এখন আমেরিকা গভীরভাবে বিভক্ত। এমন সময়ে নতুন ও তরুণ নেতৃত্বের উত্থান অত্যন্ত জরুরি।

৬৮ বছর বয়সী লুসি কর্দেরো বলেন, কুয়োমো ভালো ছিলেন না। মামদানি তরুণ, নতুন— হয়তো তিনিই কিছু পরিবর্তন আনতে পারবেন।

ব্রুকলিনের ক্রাউন হাইটসের ৫২ বছর বয়সী ফ্রিল্যান্সার মেগান মার্কস বলেন, মামদানির অবস্থান আমার চেয়েও বেশি বামঘেঁষা, কিন্তু দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে তার মতো দৃষ্টিভঙ্গির একজন নেতা প্রয়োজন। আমি তাকে সমর্থন করেছি, কারণ আমাদের আর হারানোর কিছু নেই।

অন্যদিকে, ভোটের কয়েক ঘণ্টা আগে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কুয়োমোকে সমর্থন ঘোষণা রক্ষণশীল ভোটারদের একত্র করতে চাইলেও, তা উল্টো প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

৫৫ বছর বয়সী আইনজীবী অ্যালেক্স লরেন্স বলেন, প্রাইমারিতে আমি মামদানিকে ভোট দিইনি। কিন্তু পরে তার কথাবার্তায় ইতিবাচকতা ও সততা দেখেছি। তাই এবার তাকে সুযোগ দিতে চেয়েছি।

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ড্রাইভার ইফতেখার খান বলেন, এই নির্বাচনে মুসলিম ও দক্ষিণ এশীয় ভোটারদের ঐক্যই মামদানির বড় শক্তি। ২০০১ সালের ৯/১১ হামলার পর যেভাবে মুসলিমরা বৈষম্যের শিকার হয়েছিল, সেই প্রেক্ষাপটে তার জয় আমাদের জন্য এক নতুন সূচনা।

চলমান রাজনৈতিক বিভাজনের ভেতর দিয়ে জোহরান মামদানির এই ঐতিহাসিক জয় যুক্তরাষ্ট্রে প্রগতিশীল রাজনীতির ভবিষ্যৎ দিক নির্দেশনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন