যুদ্ধবিরতি শেষ হতেই কান্দাহারে পাকিস্তানের বিমান হামলা, নিহত ৪০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ১০:১৩ এএম
অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই আফগানিস্তানের কান্দাহার প্রদেশের স্পিন বোলদাক শহরে বিমান হামলা চালিয়েছে পাকিস্তানের বিমান বাহিনী। এতে অন্তত ৪০ জন নিহত এবং আরও ১৭৯ জন আহত হয়েছেন।
আফগান সংবাদমাধ্যম *তোলো নিউজ* জানিয়েছে, নিহত ও আহতদের সবাই বেসামরিক নাগরিক, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা বেশি। স্পিন বোলদাক শহরটি আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তের কাছে অবস্থিত। শহরটির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা করিমুল্লাহ জুবাইর আগা জানিয়েছেন, স্থানীয় হাসপাতালে একসঙ্গে এত বিপুলসংখ্যক হতাহত আসায় চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।
১১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া সংঘাত ও হামলা-পাল্টা হামলার পর দুই দেশ ১৫ অক্টোবর থেকে ৪৮ ঘণ্টার জন্য যুদ্ধবিরতিতে যায়। সেই বিরতির মেয়াদ শেষ হয় ১৭ অক্টোবর, শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টার দিকে। বিরতি শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই বিমান হামলা চালায় পাকিস্তান।
বেঁচে যাওয়া আহতদের অনেকেই নিন্দা জানিয়েছেন এ হামলার। হামলায় আহত হাজি বাহরাম নামের এক ব্যক্তি তোলো নিউজকে বলেন, আমি ইতিহাসে কখনও এমন অবিচার দেখিনি। যারা নিজেদের মুসলিম বলে দাবি করে, তারা নারী, শিশু ও বেসামরিক মানুষের ওপরে হামলা চালিয়েছে।
শুধু বিমান হামলাতেই নয়, পাকিস্তানি স্থলবাহিনীও একই সময়ে স্পিন বোলদাকের নোকলি, হাজি হাসান কেলাই, ওয়ার্দাক, কুচিয়ান, শহীদ ও শোরবাক এলাকায় একের পর এক আর্টিলারি গোলা নিক্ষেপ করে। এতে বহু বাড়িঘর ও দোকানপাট ধ্বংস হয়েছে এবং হতাহত হয়েছেন আরও অনেকে।
বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক এই সংঘাতের মূল কারণ পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সক্রিয় তালেবানপন্থি গোষ্ঠী তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)। বহু বছর আগে নিষিদ্ধ ঘোষিত এই সংগঠনটি পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে।
২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান সরকার ক্ষমতায় আসার পর টিটিপির কার্যক্রম আরও বেড়েছে। পাকিস্তানের অভিযোগ, আফগানিস্তানের তালেবান সরকার তাদের আশ্রয় ও সমর্থন দিচ্ছে—যা কাবুল বরাবরই অস্বীকার করে আসছে।
উল্লেখ্য, ৯ অক্টোবর কাবুলে বিমান হামলা চালিয়ে টিটিপি নেতা নূর ওয়ালি মেহসুদকে হত্যা করে পাকিস্তান। এর পরদিন থেকেই সীমান্তবর্তী খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে শুরু হয় পাক-আফগান সেনাদের তীব্র সংঘর্ষ, যা ১৫ অক্টোবরের যুদ্ধবিরতিতে সাময়িকভাবে থেমে ছিল। কিন্তু সেই বিরতি শেষ হতেই আবারও রক্তক্ষয়ী হামলায় কেঁপে উঠল আফগান সীমান্তবর্তী অঞ্চল।
সূত্র : তোলো নিউজ



