সন্তানের উপযুক্ত নাম খুঁজে বের করাই তার পেশা
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:৪৬ পিএম
ছবি-সংগৃহীত+
সন্তানের জন্য উপযুক্ত নাম খুঁজে বের করাই তার পেশা। সান ফ্রান্সিসকোর টেইলর এ হামফ্রি বাবা-মায়েদের এমন নাম বাছাইয়ে সহায়তা করেন। এই কাজের জন্য তাকে কেউ কেউ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার দিতেও রাজি।
৩৭ বছর বয়সী হামফ্রি এক দশক আগে শিশুর নাম নিয়ে নিজের আগ্রহের কথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করা শুরু করেন। এখন তার টিকটক ও ইনস্টাগ্রামে ফলোয়ারের সংখ্যা এক লাখের বেশি। পাঁচ শতাধিক শিশুর নাম বাছাইয়ে পরামর্শ দিয়ে তিনি হয়ে উঠেছেন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম আলোচিত বেবি-নেম কনসালট্যান্ট।
ব্র্যান্ডিং, মার্কেটিং ও প্রসূতি সহায়তাকারী হিসেবে প্রশিক্ষণের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো হামফ্রি বলেন, আমি এক ধরনের ‘নেম নার্ড’। আমার কাছে হাজার হাজার নামের স্প্রেডশিট আছে, প্রতিটির উৎস, অর্থ আর ভাবের বিশ্লেষণসহ।
তার প্রাথমিক প্যাকেজ শুরু হয় মাত্র ২০০ ডলার থেকে। ইমেইলে পাঠানো হয় ব্যক্তিগত নামের তালিকা, নামের অর্থ, ও জনপ্রিয়তার তথ্যসহ। তবে বিশেষ সেবার জন্য দাম বেড়ে দাঁড়ায় ১০ হাজার ডলার পর্যন্ত। আর সবচেয়ে প্রিমিয়াম ৩০ হাজার ডলারের সেবায় থাকে বংশানুক্রমিক গবেষণা থেকে শুরু করে ‘বেবি নেম ব্র্যান্ডিং ক্যাম্পেইন’ পর্যন্ত সবকিছু।
হামফ্রি বলেন, এটা শুধু নাম বের করা নয়, কখনও কখনও মনে হয় আমি বাবা-মায়ের মধ্যে থেরাপিস্ট বা মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করছি।
তার মক্কেলদের মধ্যে আছেন সেলিব্রিটি থেকে শুরু করে ধনী পরিবার। যারা চান এমন নাম, যা বিরল কিন্তু অদ্ভুত নয়, সাধারণ কিন্তু গতানুগতিক নয়, ট্রেন্ডি হলেও অতিরঞ্জিত নয়।
একজন মক্কেল নাকি হাসপাতালে সন্তান জন্মের পর মাঝের নাম ঠিক করতে না পেরে সমস্যায় পড়েছিলেন। হামফ্রির পরামর্শেই কয়েক মিনিটের মধ্যে ঝামেলা মিটে যায় এবং হাসপাতালের অতিরিক্ত বিল এড়ানো সম্ভব হয়।
এখন বাবা-মায়ের অনুরোধ আরও নির্দিষ্ট। কেউ চান নামের মধ্যে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ছোঁয়া, কেউ খোঁজেন এমন নাম যা একই সঙ্গে আধুনিক ও কালজয়ী। হামফ্রি এমনকি নাম নিয়ে ব্রেনস্টর্মিং থিংক ট্যাংক ভাড়াও দিয়ে থাকেন।
২০২১ সালে নিউইয়র্কার-এ তার প্রোফাইল প্রকাশের পর হামফ্রির ব্যবসা দ্রুত বাড়তে থাকে। তবে একই সঙ্গে অনলাইনে তাকে নিয়ে শুরু হয় ঠাট্টা-বিদ্রূপও। কেউ কেউ বলেন, শিশুর নাম রাখতে এত টাকা খরচ করা অযৌক্তিক।
হামফ্রি বিষয়টিকে রসিকতার সঙ্গেই নিয়েছেন। তার কথায়, ইন্টারনেটে হাসির পাত্র হওয়া কিছুটা বিব্রতকর, কিন্তু ভাবলে আমিও অবাক হই। আমি জীবিকা হিসেবে মানুষকে সন্তানের নাম রাখতে সাহায্য করি।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে পূর্ণকালীন বেবি-নেম পরামর্শদাতা আছেন মাত্র ডজনখানেক। বে এরিয়ায় হামফ্রিই একমাত্র। বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুর নাম নিয়ে বিভ্রান্তি, পরে নাম নিয়ে অনুশোচনার ভয়ে এই শিল্পের চাহিদা ক্রমেই বাড়ছে।
হামফ্রি বলেন, একটি নাম কেবল শব্দ নয়, এটি একটি পরিচয়, যা সারা জীবন সঙ্গী হয়ে থাকে।
সূত্র: সান ফ্রান্সিসকো ক্রনিকল



