ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে টানা ভারী বর্ষণের ফলে দার্জিলিংয়ে ভয়াবহ ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, আহত ও নিখোঁজ রয়েছেন আরও অনেকে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় প্রশাসন।

দার্জিলিংয়ের মিরিক ও সুখিয়াপোখরি এলাকায় ভূমিধসের কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উদ্ধারকাজ চলছে, তবে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে তা ব্যাহত হচ্ছে। দার্জিলিং জেলা পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থাগুলো উদ্ধার তৎপরতায় নিয়োজিত রয়েছে।

ভারী বৃষ্টির কারণে পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিমের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দার্জিলিং-শিলিগুড়ি প্রধান সড়কসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলো বন্ধ রয়েছে। জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি ও কোচবিহারেও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

ভারতের আবহাওয়া দপ্তর (আইএমডি) সিকিমের ছয়টি জেলায় রেড অ্যালার্ট জারি করে জানিয়েছে, বজ্রসহ মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত এবং ঘণ্টায় ৩০-৪০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বইতে পারে। পরে সতর্কতা কমিয়ে অরেঞ্জ অ্যালার্ট ঘোষণা করা হয়। আবহাওয়া অফিস পূর্বাভাস দিয়েছে, ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিপাত ৭ অক্টোবর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।

ভুটানে ভারী বৃষ্টির কারণে উত্তরবঙ্গের নিম্নাঞ্চলে আকস্মিক বন্যার আশঙ্কাও রয়েছে। এ অবস্থায় গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) দার্জিলিংয়ের টাইগার হিল, রক গার্ডেনসহ সব পর্যটনকেন্দ্র সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে। ঐতিহ্যবাহী টয় ট্রেন সার্ভিসও স্থগিত করা হয়েছে।

স্থানীয় প্রশাসন বাসিন্দা ও পর্যটকদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে এবং আবহাওয়া ও সড়ক পরিস্থিতির হালনাগাদ তথ্য নজরে রাখার পরামর্শ দিয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের বিরোধীদলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী এক্স-এ দেওয়া পোস্টে জানিয়েছেন, দার্জিলিং, কালিম্পং ও কুরসিয়ং অঞ্চলে ভূমিধস ও বন্যায় যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। শিলিগুড়ি, তরাই ও ডুয়ার্সের সঙ্গেও সংযোগ বিচ্ছিন্ন। তিনি দ্রুত ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রম জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় খাদ্য, পানি, ওষুধ ও অস্থায়ী আশ্রয়ের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। তাঁর মতে, উত্তরবঙ্গের মানুষের নিরাপত্তা ও কল্যাণই এখন সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।