গাজা সিটিতে ইসরায়েলের ভয়াবহ বিমান হামলা, নিহত ৫১
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:১৫ এএম
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের সবচেয়ে বড় নগরী গাজা সিটিতে ইসরায়েলের ব্যাপক বিমান হামলায় লাখো মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় টানা বোমাবর্ষণে অন্তত ৫১ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ছয় বছরের জমজ শিশু ও তিন সাংবাদিকও রয়েছেন। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার সন্ধ্যায় ইসরায়েলি বাহিনী গাজা সিটিতে ভয়াবহ বোমাবর্ষণ চালিয়ে এলাকার সবচেয়ে উঁচু আবাসিক ভবন আল-ঘাফরি হাইরাইজ ধ্বংস করেছে। এ হামলার পর আতঙ্কে লাখো মানুষ শহর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছেন।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ র্যাপোর্টার ফ্রান্সেসকা আলবানিজে অভিযোগ করেছেন, ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক উৎখাত করতে ইসরায়েল অপ্রচলিত অস্ত্র ব্যবহার করছে।
ইসরায়েলি টিভি চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, গাজা সিটির উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে “অস্বাভাবিক তীব্র হামলা” চালানো হয়েছে। ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্সের তথ্যমতে, গত কয়েক সপ্তাহে অন্তত ৫০টি বহুতল ভবন ধ্বংস করেছে ইসরায়েল। শুধু জায়তুন এলাকায় আগস্টের শুরু থেকে এক হাজার ৫০০’র বেশি বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
টানা তৃতীয় দিনের মতো হামলার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ লিখেছেন, “সন্ত্রাসের টাওয়ার সমুদ্রে ভেঙে পড়েছে।” তবে ধ্বংস হওয়া ভবনটি হামাসের ব্যবহৃত ছিল এমন কোনো প্রমাণ তিনি উপস্থাপন করেননি।
২৩ মাস ধরে চলমান যুদ্ধে আবাসিক এলাকা, স্কুল ও হাসপাতালও বারবার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজা সিটিতে নিহত ৫১ জনের মধ্যে রয়েছে ছয় বছরের জমজ শিশু। একই সঙ্গে পৃথক হামলায় নিহত হয়েছেন তিন সাংবাদিক—প্রতিবেদক মোহাম্মদ আল-কুইফি, ফটোগ্রাফার ও সম্প্রচার প্রকৌশলী আইমান হানিয়ে এবং সাংবাদিক ইমান আল-জামিলি। এ নিয়ে ইসরায়েলি হামলায় নিহত সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মীর সংখ্যা প্রায় ২৮০ জনে পৌঁছেছে।
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মতে, সাংবাদিকদের জন্য এটি ইতিহাসের সবচেয়ে প্রাণঘাতী যুদ্ধ। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬৪ হাজার ৯০৫ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৬৪ হাজার ৯২৬ জন আহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অসংখ্য মরদেহ চাপা পড়ে আছে।



