ফিনান্সিয়াল টাইমসের ডকুমেন্টারি
হাসিনার আমলে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:১৩ পিএম
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে শত শত বিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগ তুলেছে প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ফিনান্সিয়াল টাইমস। সংস্থাটির নতুন ডকুমেন্টারি “বাংলাদেশ’স মিসিং বিলিয়নস, স্টোলেন ইন প্লেইন সাইট”-এ দাবি করা হয়েছে, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে।
ডকুমেন্টারিতে অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদরা বলেছেন, এই বিপুল অর্থ ফেরত আনা এখন সরকারের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে যুক্তরাজ্যের আর্থিক খাত ও রিয়েল এস্টেট বাজারকে বাংলাদেশি অর্থপাচারের প্রধান গন্তব্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ এসেছে। শেখ রেহানার মেয়ে ও যুক্তরাজ্যের সাবেক এমপি টিউলিপ সিদ্দিক মন্ত্রিত্ব ছাড়তে বাধ্য হন দুর্নীতির অভিযোগে। এছাড়া সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর লন্ডনে শত শত সম্পত্তি শনাক্ত ও জব্দ করেছে ব্রিটিশ অপরাধ দমন সংস্থা।
অর্থনীতিবিদদের মতে, ডিজিএফআই–এর সহায়তায় ব্যাংক দখল, ভুয়া ঋণ বিতরণ এবং হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাচার ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আর্থিক লুটতরাজ। বছরে গড়ে প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলার বিদেশে চলে গেছে।
শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস লুট হওয়া অর্থ উদ্ধারে টাস্কফোর্স গঠন করেছেন। ইতোমধ্যে ১১টি ব্যাংকের সংকটে সরকার ২৯০ বিলিয়ন টাকা ঢেলেছে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে বছরের পর বছর লেগে যাবে।
ডকুমেন্টারির শেষে বলা হয়েছে, দুর্নীতি, দায়মুক্তি ও জবাবদিহির অভাবই ২০২৪ সালের জনঅসন্তোষকে উসকে দিয়েছিল। এখন প্রশ্ন হলো—অন্তর্বর্তী সরকার কি সংস্কার ও অর্থ উদ্ধারে সফল হবে, নাকি দেশ আবারও ক্ষমতার একচেটিয়া দখলের পথে ফিরবে?



