গাজার পথে মানবিক সহায়তা নিয়ে যাওয়া ফ্লোটিলায় ফের ড্রোন হামলা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:২০ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
গাজার অবরোধ ভাঙতে মানবিক ত্রাণ সহায়তা নিয়ে যাওয়া গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা (জিএসএফ) নৌবহরে ফের ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে তিউনিশিয়ার উপকূলে একটি জাহাজে হামলার ঘটনায় আগুন ধরে যায়, যদিও বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
গত ৩১ আগস্ট স্পেনের বার্সেলোনা বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে এই নৌবহর, যাতে ৫০টির বেশি ছোট-বড় জাহাজ রয়েছে। এতে সুইডিশ পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গসহ ৪৪টি দেশের কয়েকশ অধিকারকর্মী অংশ নিয়েছেন। তাদের লক্ষ্য— গাজায় ইসরায়েলের দীর্ঘমেয়াদি অবরোধের অবসান।
নৌবহরটি বর্তমানে তিউনিশিয়ার সিদি বু শহরে অবস্থান করছে। এর আগের দিন, সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর), ফ্লোটিলার প্রধান জাহাজ ‘ফ্যামিলি বোট’-এও ড্রোন হামলা হয়। আয়োজকদের মতে, এই হামলা গাজার জনগণের ওপর চলমান আগ্রাসনের প্রেক্ষাপটে তাদের মিশনকে ব্যাহত করার চেষ্টা।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিন বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ফ্রানচেস্কা আলবানিজ হামলার ভিডিও প্রকাশ করে উদ্বেগ জানান। ভিডিওতে দেখা যায়, আলোবিহীন একটি ড্রোন দূর থেকে বস্তু ফেলে জাহাজে আগুন ধরিয়ে দেয়।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, হামলা তাদের থামাতে পারবে না। তারা পরিকল্পনা অনুযায়ী বুধবারই যাত্রা শুরু করবেন।
ইসরায়েল গত ১৫ বছর ধরে গাজায় অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর এই অবরোধ আরও কঠোর হয়। মানবাধিকারকর্মীরা বারবার অবরোধ ভাঙার চেষ্টা করলেও প্রতিবারই তা ব্যর্থ হয়েছে।
২০১০ সালে তুরস্কের নেতৃত্বে মাভি মারমারা ফ্লোটিলায় ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে ১০ জন নিহত হন। চলতি বছরের মার্চে যুক্তরাজ্যের পতাকাবাহী ম্যাডলিন জাহাজ গাজার উদ্দেশে যাত্রা করে, যা ইসরায়েলি বাহিনী জব্দ করে এবং ১২ আরোহীকে আটক করে।
এরপর ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের ‘হান্দালা’ জাহাজ গাজাবাসীর জন্য শিশুখাদ্য, ওষুধসহ জীবন রক্ষাকারী সামগ্রী নিয়ে যাত্রা করে। কিন্তু ২৬ জুলাই আন্তর্জাতিক জলসীমায় ইসরায়েলি নৌবাহিনী জাহাজটি আটকে থুনবার্গসহ ১৩ জনকে অপহরণ করে, যাদের পরে মুক্তি দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি মানবিক সহায়তা কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে এবং গাজার সংকট আরও গভীর করছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।



