গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে গণহত্যা ঘোষণা করলো আইএজিএস
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:৩০ এএম
ছবি : সংগৃহীত
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানকে গণহত্যা হিসেবে ঘোষণা করেছে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় গণহত্যা বিশেষজ্ঞদের সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব জেনোসাইড স্কলার্স (আইএজিএস)। জাতিসংঘের গণহত্যা সনদের আইনি সংজ্ঞার সঙ্গে ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের মিল রয়েছে বলে সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাতে পাস হওয়া এক প্রস্তাবে উল্লেখ করেছে সংগঠনটি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইসরায়েলের ২২ মাসব্যাপী যুদ্ধকালীন পদক্ষেপকে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করেছে আইএজিএস। তিন পাতার প্রস্তাবে বলা হয়, ইসরায়েল সুপরিকল্পিতভাবে গাজার স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও ত্রাণ খাতকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, এসব হামলায় অন্তত ৫০ হাজার শিশু নিহত বা আহত হয়েছে, যা গাজার জনগণের টিকে থাকা ও পুনর্গঠনের সক্ষমতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
আইএজিএসের প্রায় ৫০০ সদস্যের মধ্যে ২৮ শতাংশ ভোটে অংশ নেন এবং তাদের মধ্যে ৮৬ শতাংশ সদস্য প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। প্রস্তাবে ইসরায়েলি নেতাদের প্রকাশ্য উক্তি, যেমন গাজার ফিলিস্তিনিদের ‘শত্রু’ আখ্যা দেওয়া, অঞ্চলটিকে “চাপা দেওয়া” বা “নরকে পরিণত” করার হুমকির কথাও তুলে ধরা হয়েছে।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই প্রস্তাবকে “হামাসের প্রচার” এবং “দুর্বল গবেষণা” বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা দাবি করেছে, ইসরায়েলই বরং গণহত্যার শিকার।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ১,২০০ জন নিহত ও ২৫১ জন আটক হওয়ার ঘটনা অপরাধ হলেও, ইসরায়েলের পাল্টা হামলা শুধু হামাস নয়, বরং গাজার পুরো জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে পরিচালিত হয়েছে।
১৯৪৮ সালে গৃহীত জাতিসংঘের গণহত্যা সনদ অনুযায়ী, কোনো জাতীয়, নৃতাত্ত্বিক, বর্ণ বা ধর্মীয় গোষ্ঠীকে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে সংঘটিত অপরাধই গণহত্যা হিসেবে বিবেচিত হয়। আইএজিএসের প্রস্তাব সেই সংজ্ঞার ভিত্তিতেই ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে গণহত্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।



