গাজায় তীব্র ক্ষুধা সংকটের মাঝে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৭১
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৫, ১০:৫৮ এএম
ছবি : সংগৃহীত
অবরুদ্ধ গাজার মানবিক বিপর্যয়ের গভীরতা বাড়ছে প্রতিদিন। ক্ষুধা ও অপুষ্টিজনিত মৃত্যুর পাশাপাশি ইসরায়েলি বাহিনীর লাগাতার হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় কমপক্ষে ৭১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে, যাদের মধ্যে ৪২ জনই ছিলেন ত্রাণ সংগ্রহে মরিয়া মানুষ।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে অপুষ্টিজনিত মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৭ জনে, যার মধ্যে ৮৫ জন শিশু।
আন্তর্জাতিক চাপ ও সমালোচনার মুখে, ইসরায়েল ঘোষণা দিয়েছে যে রোববার থেকে বেসামরিক এলাকাগুলোতে সাময়িক হামলা বিরতির সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে, বিশেষ করে ত্রাণ সরবরাহ করিডোরে। যদিও কোন কোন এলাকায় এই বিরতি কার্যকর হবে তা পরিষ্কার করা হয়নি।
ইসরায়েল জাতিসংঘকে ত্রাণ বিতরণে ব্যর্থতার জন্য দায়ী করলেও, জাতিসংঘ ও অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ইসরায়েলকেই বাধা সৃষ্টির জন্য দায়ী করেছে। তাদের দাবি, আনুমতির অভাব ও নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে ত্রাণ পৌঁছানো যাচ্ছে না।
ইসরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরাত আকাশপথে ত্রাণ ফেলার উদ্যোগের কথা জানিয়েছে, কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি ব্যয়বহুল, ঝুঁকিপূর্ণ এবং কার্যকর সড়কপথের বিকল্প হতে পারে না।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ’র প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেন, “আকাশপথে ত্রাণ সরবরাহ মূল সমস্যাটি আড়াল করার ব্যয়বহুল কৌশল।” তাঁর মতে, এই সংকট কাটিয়ে উঠতে অবরোধ তুলে রাস্তাগুলো খুলে দিতে হবে এবং মানবিক চলাচলের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
আল জাজিরার গাজা প্রতিনিধি হানি মাহমুদ জানান, “ইসরায়েল মাত্র সাতটি প্যালেট ত্রাণ সরবরাহ করেছে, যা একটি ট্রাকের চেয়েও কম। অধিকাংশ ত্রাণ সামরিক নিষিদ্ধ এলাকায় ফেলা হয়েছে, যেখানে রাতের বেলায় তা সংগ্রহ করা প্রায় অসম্ভব।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, “বর্তমানে গণহারে ক্ষুধাজনিত মৃত্যু ঘটছে,” যা গাজার চিকিৎসা সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।
শনিবারও হামলা থেমে থাকেনি। খান ইউনিসের আল-মাওয়াসি এলাকায় ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় ছয়জন নিহত হয়েছেন, যদিও এই অঞ্চলকে 'নিরাপদ' হিসেবে চিহ্নিত করেছে ইসরায়েল।
গাজার সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জ্বালানি ও যন্ত্রাংশের ঘাটতির কারণে তাদের জরুরি সেবাদান প্রায় বন্ধ হওয়ার পথে। সংস্থাটি আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে, যেন ইসরায়েল জ্বালানি সরবরাহের অনুমতি দেয়।



