Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

গাজায় ১১২ পানি কেন্দ্রে হামলা, নিহত ৭০০

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২৫, ১২:৫১ পিএম

গাজায় ১১২ পানি কেন্দ্রে হামলা, নিহত ৭০০

ছবি - সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৫৮ হাজার ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় শতাধিকবার বিমান হামলা চালিয়েছে দখলদার বাহিনী। রোববার ১১২টি পানি সরবরাহ কেন্দ্রে হামলা করে সাত শতাধিক ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে সেনারা। তাদের হামলায় ৭২০টি পানির কূপ ধ্বংস হয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অনাহারের পর এবার পানির তৃষ্ণায় হত্যাযজ্ঞ বাস্তবায়ন করছে ইসরায়েল।


আলজাজিরা জানায়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে নির্বিচারে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করছে নেতানিয়াহুর বাহিনী। তারা গাজাবাসীকে হত্যায় নতুন নতুন কৌশল নিচ্ছে। ক্ষুধার্তদের খাবারের প্রলোভন দেখিয়ে হত্যা করার ঘটনা প্রতিদিনই ঘটছে। সর্বশেষ পানি সরবরাহ কেন্দ্রে হামলা করে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে। এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৩৬০ জন চিকিৎসা কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ইসরায়েল।


গাজার সরকারি গণমাধ্যম অফিস জানিয়েছে, পরিকল্পিত ‘তৃষ্ণার্ত যুদ্ধ’-এর অংশ হিসেবে পানির জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের ওপর হামলায় ৭০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ১১২টি মিঠা পানি সরবরাহ কেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালায়। এতে ৭২০টি পানির কূপ ধ্বংস হয়ে যায়। এগুলোর পরিষেবা বন্ধ হয়ে গেছে। সাড়ে ১২ লাখের বেশি মানুষ বিশুদ্ধ পানির সুবিধা বঞ্চিত।


এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা নিশ্চিত করছি, এই বর্ণবাদী নীতি জেনেভা কনভেনশনের অধীনে একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধাপরাধ এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইন ও মানবাধিকার আইনের গুরুতর লঙ্ঘন।’


অফিসটি জানায়, ইসরায়েল গাজায় প্রতি মাসেকোটি ২০ লাখ লিটার জ্বালানি প্রবেশে বাধা দিয়েছেএই পরিমাণ জ্বালানি আটকে থাকায় অচল হয়ে পড়ে পানি সরবরাহ কূপ, পয়ঃনিষ্কাশন কেন্দ্র, আবর্জনা সংগ্রহকারী যানবাহন এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা। পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণরূপে অচল হয়ে গেছে। বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে রোগের আরও বিস্তার ঘটেছে।


গত ৯ মার্চ ইসরায়েল গাজার মধ্যাঞ্চলের দেইর এল-বালাহতে পানি বিশুদ্ধকরণ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ লাইনটি কেটে দেয়। ফলে পানি উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। পানি সংকট আরও গভীর হয়।


এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব। কাতারের রাজধানী দোহায় যুদ্ধ শেষ করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আলোচনায় ৬০ দিনের একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিয়ে কথা হচ্ছে। এই চুক্তির মাধ্যমে ১০ জীবিত ইসরায়েলি জিম্মি ও ১৮ বন্দির মরদেহ ফেরতের ব্যাপারে আলোচনা চলছে। পরে স্থায়ী শান্তিচুক্তি নিয়ে কথা হবে।


ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছেন, তিনি আশা করেন, এই সপ্তাহে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সরাসরি যুদ্ধবিরতির আলোচনা হবে। ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফও এ ব্যাপারে আশাবাদ দিয়েছেন। ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদের উপনেতা মুহাম্মদ আল-হিন্দি বলেছেন, ‘বন্দিদের বিষয়ে এগিয়ে যাওয়ার আগে ইসরায়েল মূল শর্তগুলো মেনে চলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। আমরা একটি কাঠামো চুক্তি নিয়ে আলোচনা করছি। এতে তিনটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যথা আগ্রাসন বন্ধ করা, গাজা থেকে প্রত্যাহার ও নিরাপদ ত্রাণ বিতরণ।’ এর আগে তাঁর দেওয়া ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব আটকে যায়।


গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্যমতে, ইসরায়েলি হামলায় গাজায় মৃত্যু বেড়ে কমপক্ষে ৫৮ হাজার ২৬ জনে দাঁড়িয়েছে। এ পর্যন্ত আহত হয়েছেন ১ লাখ ৩৮ হাজার ৫২০ জন। রোববার নিহতদের মধ্যে গাজার বিশিষ্ট চিকিৎসক আহমেদ কান্দিলও রয়েছেন।


গত ২১ মাসে শত শত বিমান হামলায় ধ্বংসস্তূপের মধ্যে চাপা পড়ে হাজার হাজার মানুষ। ধ্বংসস্তূপ থেকে তোলা হয় অন্তত এক হাজার মরদেহ। গত ১৮ মার্চ ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করার পর থেকে অন্তত ৭ হাজার ৪৫০ জন নিহত হয়েছেন। গত ১৯ জানুয়ারি থেকে ১৫ মার্চ প্রথম যুদ্ধবিরতির মধ্যেও ১৭০ জনকে হত্যা করা হয়। এ সময়ের মধ্যে ২ হাজার ২০০ মরদেহ ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে তোলা হয়। ১৮ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতির আগ পর্যন্ত নিহত হন ৪৬ হাজার ৯১৩ ফিলিস্তিনি।


Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন