সুপার ওভারে হার, ভুল সিদ্ধান্তে জবাবহীন বাংলাদেশ
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ১১:১৬ এএম
ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে পরশুদিনের সুপার ওভারে হারের ধাক্কা এখনো সামলে উঠতে পারেনি বাংলাদেশ। অনেক দর্শকের মতোই এই পরাজয় মেনে নিতে পারেননি ছোট পর্দার অভিনেত্রী রুকাইয়া জাহান চমক। নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট করা এক ভিডিওতে তিনি শ্লেষাত্মক কণ্ঠে বলেন, আকিল হোসেন তো সব করে দিলেন বাংলাদেশকে জেতানোর জন্য—তবু পারেনি ওরা!
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথচলার ৩৯ বছরে ৮১৪তম ম্যাচে এসে প্রথমবারের মতো ‘টাই’-এর অভিজ্ঞতা হলো বাংলাদেশের। আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশই ছিল শেষ দল, যারা এখনও টাই ম্যাচ খেলেনি। কিন্তু প্রথম টাই-ই পরিণত হলো হৃদয়বিদারক পরাজয়ে।
অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ যদিও অনভিজ্ঞতাকে দায়ী করেছেন, বিশ্লেষকদের মতে, আসল দায় টিম ম্যানেজমেন্টের। মাঠের সিদ্ধান্ত যেমন অধিনায়কের, তেমনি কোচিং স্টাফদের কৌশলও নির্ধারণে মুখ্য ভূমিকা রাখে। টাই ম্যাচে হারের পর সমালোচনার তির এখন মূলত দলের সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাহউদ্দীনের দিকে।
বাংলাদেশকে ১১ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাঁহাতি স্পিনার আকিল হোসেনের প্রথম দুটি বলেই ওয়াইড ও নো-বলের সঙ্গে দৌড়ে মোট ৪ রান পাওয়া যায়। কিন্তু বাকি ৬ বলে ৭ রান তুলতে পারেননি সৌম্য সরকার, সাইফ হাসান ও নাজমুল হোসেন শান্ত। আকিল শুরুতে স্নায়ুচাপে ভুগলেও বাংলাদেশের ব্যাটাররা তার সুযোগ নিতে ব্যর্থ হন—উল্টো তাকে ছন্দে ফেরার সুযোগ করে দেন। কেবল রানিং বিটুইন দ্য উইকেট করেও ম্যাচটি জেতা সম্ভব ছিল, কিন্তু সেই বিচক্ষণতা দেখা যায়নি।
ম্যাচ-আপ তত্ত্বে বাঁহাতি বোলারের বিপক্ষে বাঁহাতি ব্যাটার পাঠানোর সিদ্ধান্তটিও ব্যর্থ প্রমাণিত হয়। অথচ একই ম্যাচে আকিলের শেষ ওভারে রিশাদ হোসেন ১৪ বলে অপরাজিত ৩৯ রান করে বাংলাদেশের সংগ্রহ টেনে তোলেন লড়াইয়ের পর্যায়ে। সেই রিশাদকেই সুপার ওভারে নামানো হয়নি—যা বিস্মিত করেছে প্রতিপক্ষকেও।
সংবাদ সম্মেলনে আকিল হোসেন বলেন, অবাকই হয়েছিলাম। যে ব্যাটার আমাদের শেষ ওভারে ধ্বংস করেছিল, সে-ই নামল না সুপার ওভারে! তার যুক্তিও যুক্তিযুক্ত—যে ব্যাটার ১৪ বলে ৩৯ করতে পারে, তার পক্ষে ৬ বলে ৭ রান তোলা কি এত কঠিন?
স্পষ্টতই, সঠিক সিদ্ধান্ত ও চাপ সামলানোর দক্ষতায় এগিয়ে ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মিরপুরের ঘূর্ণিমুখী উইকেটে তাদের বোলিং পরিকল্পনা ছিল নিখুঁত, ফিল্ড সেটিং ছিল সাজানো ফাঁদের মতো—যেখানে সৌম্য সরকারের আউট যেন লেখা ছিল আগেই।
একটি টাই হওয়া ম্যাচ হয়তো রেকর্ডবুকে তুচ্ছ দেখাবে, কিন্তু মাঠে যা ঘটেছে, তা বাংলাদেশ ক্রিকেটে অনেক বড় প্রশ্ন রেখে গেল—এভাবেও কি ম্যাচ হারা যায়?



