সায়মনের সাফিং ক্লাবে ৩ কিশোরীকে ধর্ষণ ; ধামাচাপার চেষ্টা
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:০৪ পিএম
প্রতীকী ছবি
কক্সবাজারের কলাতলীর সায়মন বিচ রিসোর্টের তত্ত্বাবধানে চালু হয় ‘ন ডরাই সার্ফিং ক্লাব’ এর তিন কিশোরী সার্ফারকে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে। কিন্তু সেই প্রশিক্ষককে শাস্তির মুখোমুখি করার বদলে ঘটনা ধামাচাপা দিতে মরিয়া হোটেল সায়মন কর্তৃপক্ষ।
অভিযোগ উঠেছে, দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজারে দরিদ্র পরিবারের কিশোরীদের সার্ফিং শেখানোর নামে টেনে আনা হচ্ছে এই ক্লাবে। এরপর ফাঁদে ফেলে চালানো হচ্ছে যৌন নির্যাতন। সম্প্রতি তিন কিশোরী সার্ফার সাহস করে মুখ খুলেছে। তাদের অভিযোগ, ক্লাবের প্রশিক্ষক মোহাম্মদ হাসান ওরফে সাগর দীর্ঘদিন ধরে তাদের একাধিকবার ধর্ষণ করেছেন। ভয় দেখানো হয়েছে-‘কাউকে জানালে ক্লাব থেকে বের করে দেওয়া হবে, এমনকি প্রাণে মেরে ফেলা হবে।’
ভুক্তভোগীরা বলেন, একপর্যায়ে তারা বিষয়টি সায়মন কর্তৃপক্ষকে জানান। কিন্তু ন্যায় বিচারের বদলে তাদের চুপ থাকতে বলা হয়। ধর্ষণের শিকার তিনজনকে একবার হোটেলে ডেকে ভিডিও জবানবন্দি নেওয়া হলেও আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে কর্তৃপক্ষ শুধু তাদের ‘চুপ থাকতে’ কঠোর নির্দেশ দেয়।
যদিও এর মধ্যে সায়মন রিসোর্টের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপক মোরসালীন চৌধুরী বাংলাদেশ সার্ফিং অ্যাসোসিয়েশনকে পাঠানো এক ইমেইলে তিন কিশোরীর ধর্ষণের ঘটনাটি স্বীকার করেছেন। ইমেইলে তিনি জানান, অভিযুক্ত প্রশিক্ষক মোহাম্মদ হাসান ওরফে সাগরের সদস্যপদ সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে (২৩ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর)।
এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে মোরসালীন চৌধুরী বলেন, ‘এখন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে সেটা আমি জানি না।’
ধর্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে সায়মন হোটেলের কর্মকর্তা আসাদ নুর বলেন, ‘অভিযুক্তকে আমরা ক্লাব থেকে বের করে দিয়েছি, আর কী করতে পারি?’
বাংলাদেশ সার্ফিং অ্যাসোসিয়েশন ২০১৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয়। ওইদিন কক্সবাজার প্রেস ক্লাবে এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে অ্যাসোসিয়েশনের যাত্রা ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে প্রতিবছর কক্সবাজারে জাতীয় প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
২০১৬ সালের ২৫ জুলাই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ স্বীকৃতি দেয়। বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় খেলা সার্ফিং এখন অলিম্পিকেরও একটি ইভেন্ট। বাংলাদেশ সার্ফিং অ্যাসোসিয়েশন খেলাটির প্রসারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।



