ছবি-সংগৃহীত
লাল কার্ড পেয়ে তিন ম্যাচ নিষিদ্ধ ছিলেন সাগরিকা। এই সময়ে যন্ত্রণায় পুড়ছিলেন। আর অপেক্ষায় ছিলেন দারুণ প্রত্যাবর্তনের। সোমবার সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে শেষ ম্যাচে মাঠে নেমে ঠিকই ঝলক দেখালেন তিনি। করলেন ৪ গোল! তার একার নৈপুণ্যে নেপালকে উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। তাতে ৬ ম্যাচের সবকটিতে জিতে শিরোপা নিশ্চিত করেছে মেয়েরা। সমান ম্যাচে চারটিতে জিতে রানার্সআপ নেপাল। এ নিয়ে বয়স ভিত্তিক সাফের পাঁচটিতে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ।
শোকাবহ পরিবেশেই আজ মাঠে নামেন মেয়েরা। উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতদের স্মরণে দুই দলের খেলোয়াড়রা এক মিনিটের নীরবতা পালন করেন। সেই শোককে শক্তিতে পরিণত করতেও সময় লাগেনি। কিংস অ্যারেনাতে শুরু থেকে বাংলাদেশের দাপট চলতে থাকে।
শক্তিশালী একাদশ নিয়ে ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে প্রথম গোলের সুযোগ পায় বাংলাদেশ। কাউন্টার অ্যাটাক থেকে বল পেয়ে সাগরিকা চেয়েছিলেন চিপ করে গোল করতে। সেটা কোনওমতে কর্নারের বিনিমেয় রুখে দেন নেপাল কিপার।
পঞ্চম মিনিটে আবার স্বপ্নার কর্নারে সাগরিকার হেড গোল লাইন থেকে ক্লিয়ার করে সে যাত্রায় নেপালকে রক্ষা করেন আনিশা রাই। তবে তিন মিনিট পর সেই স্বপ্নার ডিফেন্স চেড়া থ্রু ধরে ঠিকই গোল করেন সাগরিকা। প্রায় মাঝ মাঠ থেকে স্বপ্নার পাস নিয়ে অফসাইড ফাঁদ ভেঙে আক্রমণে উঠেন বাংলাদেশের এই স্ট্রাইকার। নেপালের আগুয়ান কিপার সুজাতা তামাং বক্স ছেড়ে বের হয়েও রুখতে পারেননি তাকে। গোলকিপারকে কাটিয়ে ডান পায়ের কোনাকুনি শটে বল ফাঁকা পোস্টে জমা করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেন তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে মাঠে ফেরা সাগরিকা।
১৯ মিনিটে বড় বাঁচা বেঁচে যায় বাংলাদেশ। কিপার মিলির গ্লাভস ফসকে একটি বল বেরিয়ে গেলে পূর্ণিমা রাইেয়ের ভলি দূরের পোস্টে
আঘাত করে ফিরে আসে। ফিরতি বলে সুক্রিয়া মিয়ার হেড মিলি সেভ করেন। দুই মিনিট পর বক্সের বেশ বাইরে থেকে মুনকির বাঁ পায়ের শট অনেকটা দৌড়ে গিয়ে গোললাইন থেকে ক্লিয়ার করেন আনিশা রাই।
বাকি অংশে স্বাগতিকদের পায়ে অধিকাংশ সময় জুড়ে বল থাকলেও ব্যবধান বাড়েনি। ১ গোলে এগিয়ে থেকে ড্রেসিং রুমে গেছে পিটার বাটলারের দল।
বিরতির পরও স্বাগতিকদের দাপট চলতেই থাকে। গোল আসে আরও তিনটি। ৫১ মিনিটে অসাধারণ গোলে বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নেন সাগরিকা। উমেলহা মারমার থ্রু পাস ডান পা দিয়ে ধরে চকিতে ঘুড়ে মার্কারকে বোকা বানিয়ে আগুয়ান গোলকিপারের পাশ দিয়ে নিঁখুত শটে স্কোর ২-০ করেন সাগরিকা। ৫৮ মিনিটে হ্যাটট্রিকও তুলে নেন তিনি। নিজেদের অর্ধ থেকে জয়নব বিবি রিতার লং বল ধরতে অফসাইড ফাঁদ ভেঙে এগিয়ে যান এই স্ট্রাইকার। বক্সের ঠিক বাইরে থেকে দেখে শুনে ডান পায়ে চিপ করে আগুয়ান কিপারের মাথার ওপর দিয়ে জালে বল পাঠাতে ভুল করেননি তিনি। এটি এই আসরে সাগরিকার দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক। প্রথমটি করেছিলেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে।
৭৭ মিনিটে চতুর্থ গোল পায় বাংলাদেশ। মুনকি আক্তারের থ্রু থেকে বক্সের ওপরে বল পেয়ে সাগরিকা দারুণ ফিনিশিং করেন।
শেষ দিকে নেপাল সুযোগ পেয়েও গোল শোধ দিতে পারেনি। সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন



