‘আমার নিষ্পাপ নিরপরাধ ছেলেটাকে কেন গুলি করে মারল’
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২৪, ১১:০১ এএম
‘আমার নিষ্পাপ নিরপরাধ ছেলেটাকে কেন গুলি করে মারল’
‘আমার ছেলে কী দোষ করেছে। আমার নিষ্পাপ নিরপরাধ ছেলেটাকে কেন গুলি করে মারল। আমি কার কাছে বিচার দেব।’ আদরের সন্তানকে হারিয়ে এভাবেই বুক চাপড়িয়ে কাঁদছিলেন কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষের সময় নিহত মেধাবী শিক্ষার্থী ইকরাম হোসেন কাউছারের বাবা মাওলানা আনোয়ার হোসেন (৫০)। গত ১৯ জুলাই শুক্রবার জুমার নামাজ আদায়ের পর বন্ধুদের সঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলনে যোগ দেন ফেনীর পরশুরাম উপজেলার
রাজেশপুর গ্রামের ইকরাম হোসেন কাউছার। মাথায় গুলি লেগে মারা যান তিনি। ইকরাম ঢাকার কবি নজরুল কলেজে মাস্টার্সে অধ্যায়নরত ছিলেন।
নিহতের ছোট ভাই ফারুক হোসেন জানান, গত ১৯ জুলাই বিকেল ৪টার দিকে কবি নজরুল কলেজ সংলগ্ন লক্ষ্মীবাজার এলাকায় পুলিশের ছোড়া একটি বুলেট মাথায় লেগে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন কাউছার। সেখান থেকে এক ভ্যানচালক তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এরপর ওই ভ্যানচালক বাবার নম্বরে কল দিয়ে ভাইয়ার মৃত্যুর সংবাদটি জানান। মরদেহ পরদিন রাত ৯টায় পরশুরামের রাজেশপুরে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
নিহত ইমরান হোসেন কাউছারের বাবা মাওলানা আনোয়ার হোসেন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘পৃথিবীর বুকে সবচেয়ে ভারি বস্তু পিতার কাঁধে সন্তানের লাশ। ছেলেকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন, আশা ছিল। ঘাতক একটি বুলেট সব নিমিষেই শেষ করে দিল। আমার সন্তান হত্যার বিচার আমি কার কাছে দেব। ছাত্রদের এই আন্দোলনে আমার মতো অনেক বাবা তাদের সন্তান হারিয়েছে। আপনজন হারানোর বেদনা কাউকে বলে বোঝানো যাবে না। আমি আল্লাহর কাছে বিচার দিলাম, নিশ্চয়ই আল্লাহ সঠিক বিচার করবেন।’
নিহত কাউছারের প্রতিবেশী দন্ত চিকিৎসক আবদুল কাদের সম্রাট বলেন, ‘ছেলেটি আমাদের চোখের সামনে বড় হয়েছে। সে অত্যন্ত ভদ্র, বিনয়ী ও মেধাবী ছিল। এভাবে ছেলেটার মৃত্যু হবে ভাবতেই বারবার চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। আমরা এই হত্যার বিচার চাই।’
এদিকে আদরের সন্তানকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ কাউছারের মা রুমি আক্তার। সন্তানের শোকে নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। যখনি হুঁশ ফিরছে, কাউছার কাউছার বলে বিলাপ করছেন। তার আর্তনাদ দেখে কাঁদছেন প্রতিবেশীরাও।