Logo
Logo
×

ধর্ম

মহানবী (স.) কোরআনের হৃৎপিণ্ড বলেছেন যে সুরাকে

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৩০ পিএম

মহানবী (স.) কোরআনের হৃৎপিণ্ড বলেছেন যে সুরাকে

মহানবী (স.) কোরআনের হৃৎপিণ্ড বলেছেন যে সুরাকে

নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোরআন দিয়ে তার উম্মতকে যেমন বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা দিয়েছেন তেমনই কোরআনের কিছু সুরার গুরুত্ব বুঝাতে সেগুলোর ফজিলতও বর্ণনা করেছেন তিনি।

তেমনই এক সুরা হলো পবিত্র কোরআনের ৩৬তম সুরা। মক্কায় অবতীর্ণ এ সুরাটির ৫ রুকু ও ৮৩ আয়াত রয়েছে। প্রথম দুটি অক্ষর থেকে এই সুরাটির নাম। সুরা ইয়াসিন। নবীজি (স.) এই সুরাকে পবিত্র কোরআনের হৃৎপিণ্ড বলে বর্ণনা করেছেন।

এ সুরায় আল্লাহর একত্ব ও মহানবী (স.)-এর রিসালাত সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। অংশীদারের সমালোচনা, পৌত্তলিকদের অমরতা, অবিশ্বাসীদের কূটতর্কের উল্লেখ করে ইসলামের সত্যতা ও কিয়ামতের পুনরুত্থানের বর্ণনা রয়েছে।

সুরার শুরুতে আল্লাহ তাআলা তার রসুলের রিসালাতের সত্যতার ব্যাপারে কোরআনে শপথ করেছেন। এরপর কোরাইশ কাফেরের আলোচনা করা হয়েছে, যারা কুফর ও গোমরাহ করত, তাদের জন্য রয়েছে শাস্তি।

এরপর এক জনপদের আলোচনা করা হয়েছে, যারা একে একে তিনজন নবীকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করতে চেয়েছ। আল্লাহ সেই জনপদের হেদায়েতের জন্য নবী পাঠানো সত্ত্বেও তারা হেদায়েতের পথে চলেনি। তারা একে একে তিনজন নবীকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করে।

তখন এক ব্যক্তি দৌড়ে সে সম্প্রদায়ের লোকদের কাছে আসেন। মুফাসসিরগণ বলেন, তার নাম ছিল হাবিবে নাজ্জার। তিনি বলেন, নবীদের পীড়ন করলে আল্লাহর আজাব নেমে আসতে পারে। তিনি তার সম্প্রদায়কে সতর্ক করে তাদের নবীদের অনুসরণ করার পরামর্শ দেন।

এরপর সবার সামনে নিজের ঈমান আনার ঘোষণা দিলে সবাই তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাকে হত্যা করে। মৃত্যুর পর তিনি জান্নাতে প্রবেশ করেন। আল্লাহর প্রতিশ্রুত জান্নাতের নেয়ামত প্রত্যক্ষ করার সুযোগ পাওয়ার পর তার মুখ থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে বেরিয়ে আসে, আল্লাহ যে আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। আমাকে সম্মানিত ও সৌভাগ্যবান করেছেন, আমার সম্প্রদায় যদি তা জানত! (তাফসিরে ইবনে কাসির)

আল্লাহর অস্তিত্ব, একত্ব এবং সৃষ্টির বিষয় কোরআনে উল্লেখ হয়েছে। বৃষ্টি ঝরিয়ে মাটিকে সতেজ রাখা, দিন–রাত ও চন্দ্র-সূর্যের অস্তিত্ব, সমুদ্রে চলাচলরত জাহাজ ও নৌকা ইত্যাদি জাগতিক সচলতা হিসেবে আল্লাহ যেসব নিয়ামত দেয়েছেন, তার বিবরণ এতে রয়েছে। এ সুরার বিষয়বস্তু: মৃত্যুর পর পুনরুত্থান। এ সুরায় বলা হয়েছে, আমি মৃতকে জীবিত করি আর লিখে রাখি ওরা যা পাঠায় ও ওদের যে পায়ের চিহ্ন রেখে যায়। এক সুস্পষ্ট গ্রন্থে আমি সব সংরক্ষণ করে রেখেছি। (আয়াত ১২)

সুরা ইয়াসিনে রয়েছে মুমিন ও কাফেরদের প্রতি প্রতিদানের কথা এবং জাগতিক নিদর্শন নিয়ে চিন্তা করে আল্লাহ যে একত্ব ও অদ্বিতীয় তার নিশ্চয়তা বিধান। যে রসুলদের প্রতি ঈমান আনে এবং তাদের সত্যায়ন করে, সে স্বজাতিকে আল্লাহর পথে আহ্বান করে এবং জীবনে-মরণে তাদের কল্যাণ কামনা করে। বিশ্বাসীরা আরেক বিশ্বাসীতে সহায়তা করে। একে অপরের মাধ্যমে শক্তিশালী হয়। বিশ্বজগতের সৃষ্টি, বিন্যাস ও শৃঙ্খলা অবিশ্বাস্য সূক্ষ্ম ও নিখুঁত। এর উদাহরণ অগণিত। এমন সময় কিয়ামত এসে হানা দেবে, যখন মানুষ বাজারে কেনাকাটার মতো দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় ব্যস্ত থাকবে। কোরআন থেকে কেবল জীবিতরাই উপকৃত হতে পারে।

শিঙায় দুটি ফুৎকারের কথা আল্লাহ উল্লেখ করেছেন: প্রথম ফুৎকারে পৃথিবীর সবাই ভীত-প্রকম্পিত হবে, সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে এবং আল্লাহ যাদের ইচ্ছা করেন, তারা ছাড়া সবাই মারা যাবে। আল্লাহ বলেন, ‘আর যেদিন শিঙায় ফুৎকার দেওয়া হবে, সেদিন আসমানমণ্ডলী ও জমিনের সবাই ভীত-বিহ্বল হয়ে পড়বে, তবে আল্লাহ যাদের চাইবেন তারা ব্যতীত এবং সকলেই তাঁর নিকট আসবে বিনীত অবস্থায়। আর (কিয়ামতের দিন) শিঙায় ফুৎকার দেয়া হবে, তখন যাদের আল্লাহ ইচ্ছা করেন, তারা ব্যতীত আসমানমণ্ডলী ও জমিনের সবাই।’

এ সুরায় রয়েছে রসুল হিসেবে মুহাম্মদ (স.) সত্যতা এবং তাকে পাঠানোর উদ্দেশ্য। মানুষের সমস্ত কর্ম ও কর্মের প্রভাব এতে লেখা রয়েছে। অতীতে অনেকেই রসুলদেরও প্রত্যাখ্যান করেছে, কিন্তু পুনরুত্থান ও বিচার অনিবার্য। মানুষের কল্যাণে চাঁদ ও সূর্যের জন্য আল্লাহ কক্ষপথ ও অক্ষপথ নির্ধারণ করেছেন।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন