Logo
Logo
×

ধর্ম

বিবাহিত সম্পর্ক দৃঢ় হবে যে ২ গুণে

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:১৫ পিএম

বিবাহিত সম্পর্ক দৃঢ় হবে যে ২ গুণে

বিয়ে করতে অনাগ্রহী মানুষের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে ইদানীং। আবার যারা বিয়ে করছে, তাদের বড় অংশই টিকিয়ে রাখতে পারছে না সম্পর্ক। মুসলিম সমাজে পরিবারভিত্তিক বন্ধন, বিয়ে ও বৈধ সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয় সবসময়। তবে অনেক মুসলিম পরিবারেও এখন পারিবারিক ও বৈবাহিক সম্পর্ক ঠুনকো সম্পর্কে পরিণত হয়েছে।

বৈবাহিক সম্পর্ক দৃঢ় হয় না কেন?

বিয়ে ও বৈধ সম্পর্কে প্রতিবন্ধকতার মূল কারণ হলো ভুল মানসিকতা। সম্পদ, বংশ, সৌন্দর্য, পেশা—  বৈবাহিক সম্পর্কে এসব প্রাধান্য দেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে বর্তমানে। এর পেছনে রয়েছে নৈতিকতা, আধ্যাত্মিকতার অভাব ও জীবনদৃষ্টির অপরিপক্কতা।

আরেকটি বড় সমস্যা হলো পারস্পরিক সহযোগিতার কথা না ভেবে নিজের সুবিধা-অসুবিধাকেই প্রাধান্য দেওয়া। বিয়ে মানে পারস্পরিক বোঝাপেড়া, সহযোগিতা, সহমর্মিতা ও একে অপরের মাঝে সুখ-দুঃখ ভাগ করে নেওয়া। কিন্তু যখন সবাই শুধু নিজের সুখ, স্বার্থ আর স্বাধীনতাকেই অগ্রাধিকার দেয়, তখন দাম্পত্য জীবন টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে।

নিজের সুবিধাকে সবকিছুর উর্ধ্বে রাখার এই মানসিকতা শুধু তরুণদের মাঝে আছে এমন নয়, বরং অভিভাবক অনেকেই সন্তানের বিয়েতে নিজেদের সামাজিক মর্যাদা বা আভিজাত্যকে বেশি গুরুত্ব দেন। ফলে প্রকৃত চাহিদাগুলো চাপা পড়ে যায়।

বিয়ের পরও নিজেকে প্রাধান্য দেওয়ার মানসিকতার বিরূপ প্রভাব দেখা যায় দাম্পত্য জীবনে। অনেকে ভেবে নেয়, এখন শুধু ‘আমি আর আমার স্বামী/স্ত্রী’। এতে করে আত্মীয়তার বন্ধন দুর্বল হয়, সম্পর্ক ছিন্ন হয়। কেউ কেউ বাবা-মাকে পর্যন্ত ‘ঝামেলা’ মনে করে দূরে সরিয়ে রাখতে চান।

দাম্পত্য দৃঢ় করবে যে দুই গুণ

এই সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে যে দুই গুণ সবচেয়ে জরুরি তা হলো শোকর (কৃতজ্ঞতা) এবং সবর (ধৈর্য)।

শোকর মানে আল্লাহর নেয়ামতের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা। মানুষ যতই অভাবের কথা ভাবুক, আল্লাহ তায়ালা তাকে যে সুখ, শান্তি ও সফলতা দিয়েছেন তা কম নয়। অন্তরে এই ধারণা রাখা।

সবর মানে জীবনের কঠিন সময়গুলোকে আল্লাহর পরীক্ষা হিসেবে গ্রহণ করা এবং সেগুলোকে আত্মোন্নয়নের সুযোগ হিসেবে দেখা।

এ দুই গুণ ছাড়া আধ্যাত্মিক উন্নতি সম্ভব নয়। এমনকি দাম্পত্য জীবনও সুখকর হওয়া সম্ভব নয়।

মুসলিম মনীষীদের জীবনী থেকে এর চমৎকার একটি দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়। এক বৃদ্ধ দম্পতি জীবনের শেষ প্রান্তে এসে বলেছিলেন, ধৈর্য ও কৃতজ্ঞতা আমাদের দাম্পত্য টিকিয়ে রেখেছে। সেই বৃদ্ধের স্ত্রী বলেছিলেন, শহরের সবচেয়ে সুন্দরী ছিলাম, তবুও সবাই পছন্দ করবে না এমন একজনের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল।এতে ধৈর্য ধারণ করেছিলাম। আর স্বামী বলেছিলেন, আমাকে এমন একজন সঙ্গী দেওয়ার জন্য আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছি সবসময়।

এই দুই গুণই মানুষের জীবনের দুই ডানা। যে ডানা দিয়ে মানুষ আল্লাহর নৈকট্য পর্যন্ত পৌঁছে যায়।

এই দুই গুণ যে কারণে জরুরি

অনেক তরুণ-তরুণী ‘পারফেক্ট’ জীবনসঙ্গীর জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। কিন্তু একেবারে পারফেক্ট বলতে কেউ বা কিছু নেই পৃথিবীতে। তাই অপেক্ষা করতে করতে অনেকে বাকি জীবন একাকী কাটিয়ে দেয়।

তাই বিয়ের পরও সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে প্রতিদিন কৃতজ্ঞতা ও ধৈর্য ধারণ করা জরুরি। কারণ জীবনে যত কষ্টই আসুক, এর মাঝেও শেখার অফুরন্ত সুযোগ থাকে। আর জীবন ও দাম্পত্যে যতই অভাব থাকুক, মনে রাখতে হবে আল্লাহর নেয়ামত সবসময় আমাদের চারপাশ ঘিরে রেখেছে।

আমাদের করণীয়

নিজের সুবিধাকে প্রাধান্য দেওয়া এবং নৈতিকতা ও আদর্শ ঠিক না থাকা—এই দুই রোগ মুসলিম পরিবারের ভিত নষ্ট করছে। পরিবার দুর্বল হলেদাম্পত্য সম্পর্ক দৃঢ় হবে যে ২ গুণে সমাজও দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই সমাজের ভবিষ্যৎ রক্ষায় বিয়ে ও বৈধ সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা জরুরি। এ বিষয়ে আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন