ছবি- সংগৃহীত
আশুরার দিন মুসলিম ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় এবং হৃদয়বিদারক ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। মানবতার শিক্ষা, ন্যায়ের প্রতি অবিচলতা এবং ইসলামী চেতনার গভীরতম প্রতীক হয়ে রয়েছে কারবালার প্রান্তরে ইমাম হোসাইন (রা.)-এর শাহাদাত।
ইতিহাসে জানা যায়, হিজরি ৬০ সালে হজরত মুয়াবিয়া (রা.)-এর ইন্তেকালের পর ইয়াজিদ অবৈধভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করেন। তার কঠোর, দুর্বিনীত এবং ধর্মবিরোধী চরিত্রের কারণে মুসলিম সমাজের বড় অংশ তাকে খলিফা হিসেবে গ্রহণ করেনি। বিপরীতে, মদিনা ও কুফার জনগণ ইমাম হোসাইন (রা.)-কে নেতৃত্বে দেখতে চেয়েছিল এবং লক্ষাধিক মানুষ তাকে পত্র লিখে দাওয়াত দেন যেন তিনি নেতৃত্ব গ্রহণ করেন।
যদিও সাহাবিদের পরামর্শে ইমাম হোসাইন (রা.) সতর্ক ছিলেন, তবু কুফাবাসীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে তিনি তার প্রতিনিধি মুসলিম ইবনে আকিলকে পরিস্থিতি যাচাই করতে পাঠান। মুসলিম ইবনে আকিল সেখানে বিপুল সমর্থন পান এবং খবর পাঠান যে ইমাম কুফায় আগমন করতে পারেন। এই আশ্বাসে ইমাম হোসাইন (রা.) পরিবারের সদস্য ও অনুচরসহ কুফার পথে রওনা দেন।
তবে ইয়াজিদ তার আগমন ঠেকাতে গভর্নর পরিবর্তন করে ওবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদকে দায়িত্ব দেন। ইবনে জিয়াদ কঠোর দমননীতি গ্রহণ করে মুসলিম ইবনে আকিলকে হত্যা করে এবং ইমাম হোসাইনকে বাধা দিতে সেনাবাহিনী প্রেরণ করে।
কারবালার প্রান্তরে ফোরাত নদীর তীরে ইমাম হোসাইন (রা.)-এর শিবির অবরোধ করা হয় এবং পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ইমাম হোসাইন (রা.) শান্তিপূর্ণভাবে আলোচনার প্রস্তাব দিলেও তাকে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়, যা তিনি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেন।
১০ মহররম সকাল থেকে শুরু হয় ভয়াবহ যুদ্ধ। ইমাম হোসাইন (রা.) এবং তার সঙ্গীরা একে একে শহীদ হন। ইমামের ছিন্ন মস্তক বর্শার ফলায় বিদ্ধ করে দামেস্কে ইয়াজিদের দরবারে পাঠানো হয়, যা ইতিহাসে নির্মমতার এক করুণ নজির।



