স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্রের পক্ষে জামায়াতের অঙ্গীকার : ডা. তাহের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৫৬ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে জামায়াতে ইসলামী কোনো রাষ্ট্রের রক্তচক্ষুকে ভয় করে না, পরোয়া করে না বলে জানিয়েছেন দলের নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. তাহের বলেন, আমরা একটি টেকসই ও গ্রহণযোগ্য গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় কাজ করছি। দেশ ও জাতির কল্যাণে যেখানে প্রয়োজন সেখানে ব্যক্তি বা দলীয় স্বার্থকে প্রাধান্য না দিয়ে সংস্কার ও পরিবর্তনের পক্ষে জামায়াত দৃঢ়ভাবে অবস্থান নেয়।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব প্রশ্নে আমরা আপসহীন। কোনো রাষ্ট্র বা শক্তির হস্তক্ষেপকে আমরা মেনে নিই না। তেমনিভাবে একটি ক্রেডিবল ও সাসটেইনেবল গণতন্ত্র গড়ার প্রতিশ্রুতিও আমাদের রয়েছে।
দলীয় পর্যায়ে গণতন্ত্র চর্চার উদাহরণ দিয়ে তিনি জানান, জামায়াতের দলীয় নির্বাচন হয় কোনো প্রার্থী, প্যানেল কিংবা প্রচারণা ছাড়া— খোলামেলা ব্যালটে। এটাই আমাদের বৈশিষ্ট্য এবং এই চর্চা আমরা দেশের রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনতে চাই।
স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, গত তিনটি নির্বাচনের ফলাফল জনগণের ভোটের প্রতিফলন নয়। ভোট ছাড়া ক্ষমতায় থাকার সংস্কৃতি দেশের জন্য ক্ষতিকর। আমরা এর পুনরাবৃত্তি চাই না।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়ে তাহের বলেন, ভোট ছাড়া ক্ষমতায় যাওয়া, ঘুষ নিয়ে উন্নয়ন বরাদ্দ ভোগ করা, এবং পরিশ্রম ছাড়া অর্থ উপার্জন— সবই দুর্নীতি। বলা হচ্ছে, ২৩০ থেকে ২৩৫ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে। এ টাকা যদি জনগণের কল্যাণে ব্যবহৃত হতো, তাহলে দেশের এই দুরবস্থা হতো না।
তিনি বলেন, আমরা দুর্নীতিমুক্ত, জবাবদিহিমূলক বাংলাদেশ চাই। উন্নত নৈতিকতাসম্পন্ন শিক্ষা ও সমাজ ব্যবস্থার মাধ্যমে আলোকিত রাষ্ট্র গড়তে চাই। এ লক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামী কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আরও জানান, কনস্ট্রাকটিভ, পজিটিভ ও বাস্তবভিত্তিক সংস্কারের জন্য জামায়াত পূর্ণ সহায়তা দেবে— এই মর্মে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে আশ্বস্ত করা হয়েছে।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান প্রমুখ।
জামায়াত নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ড. হামিদুর রহমান আযাদ, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, এবং মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ।



