সেভেন সিস্টার্সকে রক্ষার জন্য ভারত মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন দিয়েছে : সারজিস আলম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:২১ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম জানিয়েছেন, ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ ভারতকে মনিবের আসনে বসিয়ে রেখেছিল। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধকে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হিসেবে মনে করেছেন- এ কথা পরিষ্কার হয়েছে। সেভেন সিস্টার্সকে বাঁচানোর জন্য মুক্তিযুদ্ধে ভারত সমর্থন দিয়েছিল।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম পলোগ্রাউন্ড ময়দানের কনফারেন্স লাউঞ্জে এক গোলটেবিল বৈঠকে এ কথা জানান তিনি। ভারতের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আধিপত্য প্রতিরোধ, চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সমস্যার সমাধান এবং বৈষম্যহীন কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা’ বিষয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সারজিস আলম বলেন, বর্তমান তরুণ প্রজন্ম বিবেক বেঁচে দেয়া দলান্ধ কোনো প্রজন্ম নয়। এই প্রজন্ম অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে। গত ১৫ বছরে ভারতের আধিপত্যবাদ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে চাপিয়ে দিয়ে বাংলাদেশকে দাসত্বের শৃঙ্খলের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। খুনি শেখ হাসিনা খুনের ব্যাপারে কোনো অনুশোচনা না করে আরো দাম্ভিকতা দেখাচ্ছে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামের সমুদ্র বন্দর, পার্বত্য এলাকা ও পাহাড়িদের উসকে দিয়ে অপতৎপরতার চেষ্টা হতে পারে। চট্টগ্রামকে নিরাপদ রাখতে পারলে বাংলাদেশকে নিরাপদ রাখতে পারব। ভারতে বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেল প্রচার করা হয় না। আর বাংলাদেশে ভারতের টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠান প্রচার করে বাংলাদেশের পরিবারপ্রথাকে ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশি হিসেবে আমাদের সংস্কৃতি সংরক্ষণ করে ভারতীয় অপসংস্কৃতির আগ্রাসন রুখে দিতে হবে। বাংলাদেশ ভারতের সম্পর্ক সম্মানের হলে সে সম্পর্ক টিকে থাকবে। পৃথিবীর যে কোনো দেশের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান থাকবে ইনশাআল্লাহ।
গোলটেবিল আলোচনার প্রধান অতিথি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ব্যানারে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আমরা ন্যায়ের পক্ষে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাজপথে নেমেছিলাম। কিন্তু এখন অনেক ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয়ভাবে আমাদের সঙ্গে বৈষম্য করা হচ্ছে। আমরা একটি সুন্দর দেশ গড়তে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে বারবার বার্তা দেয়ার চেষ্টা করে আসছি। স্বাধীন বাংলাদেশে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ না করে দ্রুত নির্বাচন আয়োজন করা নিয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হলে তা দেশবাসী মেনে নেবে না। এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হলে তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম নগর সভাপতি আলহাজ মুহাম্মাদ জান্নাতুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য দেন- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগর আমির শাহজাহান চৌধুরী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি মাওলানা তাজুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় নেতা আশরাফ উদ্দিন মাহদী, বিএনপি চট্টগ্রাম মহানগর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সম্পাদক ডা. এস এম সরোয়ার আলম, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. নাজিমুদ্দিন চৌধুরী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা খান তালাত মোহাম্মদ রাফি, খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি অধ্যাপক খুরশিদ আলম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি হাফেজ মাওলানা জাকারিয়া, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সমন্বয়ক আবদুর রহমান, গণঅধিকার পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, সেক্রেটারি মুহাম্মদ ইউসুফ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক এনায়েতুল্লাহ আল মাদানী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. শহিদুল হক, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগর সেক্রেটারি অধ্যক্ষ নুরুল আমিন, চট্টগ্রাম মহানগর নেজামে ইসলামী পার্টির সভাপতি ক্বারি ফজলুল করীম জেহাদী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আল ফুরকান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম জেলা সমন্বয়ক মোহাম্মদ রিজুয়ান সিদ্দিকী, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ সভাপতি কাজী মজিবুর রহমান মুজিব, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবীর খালুভী, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির চট্টগ্রাম মহানগর সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগর সেক্রেটারি আল মোহাম্মদ ইকবাল, ইসলামী আইনজীবী পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি অ্যাডভোকেট পারভেজ তালুকদার প্রমুখ।