‘পতিত সরকারের দোসররা আমলাতন্ত্রসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ঘাপটি মেরে রয়েছে’
রংপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:০৬ পিএম
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি
টাকা পাচারের দুর্নীতি ঢাকতে সচিবালয়ে আগুন দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে পরাজিত স্বৈরাচারী সরকারের অনেক দোসর আমলাতন্ত্রে, পুলিশসহ সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ঘাপটি মেরে রয়েছে। তারা কোথায় নাশকতা করছে, চক্রান্ত করছে ঠিক নেই। টাকা পাচারের দুর্নীতি ঢাকতে সচিবালয়ে আগুন দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বড়বালা ইউনিয়নের ছড়ান আটপুনিয়া গ্রামে সচিবালয়ে আগুন নেভাতে গিয়ে নিহত ফায়ার সার্ভিসের সদস্য সোহানুর জামান নয়নের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, সচিবালয়ে আগুন দিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, রোডস, ডাক বিভাগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ফাইল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। হাজার হাজার কোটি টাকার পাচারের যে কাহিনী ছিল যেটি যেন আলোর মুখে দেখতে না পারে সেই ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, এই দেশের মানুষের টাকা আত্মাসাৎ করেছে শেখ হাসিনা। আজকে তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৩৫০ মিলিয়ন ডলার পাচারের কাহিনী যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করছে।
তিনি বলেন, আমাদের সামনে অনেক কাজ বাকী রয়েছে। আমরা স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে যদি রক্ষা করতে পারি, তাহলে দেশের নাগরিকের স্বাধীনতা নিশ্চিত হবে। গোটা পৃথিবী শেখ হাসিনার পতন এবং নতুন গণতন্ত্রের সম্ভাবনার জন্য আন্দোলনে আহত ও শহীদদের প্রতি সংহতি জানিয়েছে। কিন্তু পার্শ্ববর্তী দেশের মনে দুঃখ লেগেছে। তারা শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার জন্য, টিকিয়ে রাখার জন্য নানা ধরনের চক্রান্ত করছে। তারা বলছে দেশে সংখ্যালঘু নিপীড়ন হচ্ছে।
রুহুল কবির রিজভী বাজার সম্পর্কে বলেন, আজ চারদিকে যে অব্যবস্থাপনা চলছে তা জনগণ প্রত্যাশা করেনি। হাসিনার আমলে সিন্ডিকেট হয়েছে, বাজার মাফিয়া হয়েছে। ২০২৩ সাল পর্যন্ত দেশে কখনো আলু আমদানী করা হয়নি। গত বছর থেকে শুরু হয়েছে এটি। শেখ হাসিনার আমলে যা হয়েছে তা এখন কেন হবে। কেন বাজারে এত জিনিষপত্রের দাম বাড়ছে, কেন মানুষ নূন্যতম মূল্যে দ্রব্যমূল্য কিনতে পারছে না। সরকারকে এটি নিশ্চিত করতে হবে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, সচিবালয়ে আসবাবপত্র, নথিপত্র অগ্নিকান্ডে পুড়ে ছাই হয়েছে। এটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। শেখ হাসিনা সরকারের একজন প্রতাপশালী আমলা মূখ্য সচিব অনেক টাকা পাচার করেছে। তার ফাইলটি ছিল পুড়ে যাওয়া ফাইলে মধ্যে। আমি এটিকে বিছিন্ন বিষয় বলে মনে করছি না। যারা এই অগ্নিকান্ড নিবারনের জন্য যুদ্ধ করেছে তাদের মধ্যে সোহানুর জামান নয়ন একজন। আমি মনে করি তাদের পরিবারের ভরন-পোষনের দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবীব দুলু, জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম, বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম, মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জহির আলম নয়নসহ অন্যরা।