খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার ৭ বছর পর মামলা দায়ের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:০৫ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
ফেনীতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে বোমা হামলা ও দুটি বাসে আগুন দেওয়ার ৭ বছর পর সেই সময়ের পুলিশ সুপার এস এম জাহাঙ্গীর সরকারসহ ১৭৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রবিবার (৮) ডিসেম্বর) ফেনী সদর আমলি আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইয়েদ শাফায়াত লিখিতভাবে এই আদেশ দেন।
মামলাটি তদন্ত করে ৪৫ দিনের মধ্যে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। এর আগে, গত ২৮ নভেম্বর যমুনা হাই ডিলাক্স পরিবহনের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মিলন বাদী হয়ে ২৮ জনের নাম উল্লেখ ও আরো ১০০-১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ফেনী সদর আমলি আদালতে এ মামলার আবেদন করেন।
মামলায় অন্য আসামিরা হলেন ফেনীর সেই সময়ের সহকারী পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আমিনুল ইসলাম, ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদ খান চৌধুরী, ফেনী সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি করিম উল্যাহ বি.কম, পরশুরাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেল, ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হারুন মজুমদার, ফেনী জেলা যুবলীগের সভাপতি ও দাগনভূঞা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন, দাগনভূঞা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক পৌর মেয়র ওমর ফারুক খান, ফেনী পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আমির হোসেন বাহার, লুৎফুর রহমান খোকন হাজারী, সিরাজুল ইসলাম, ফাজিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মজিবুল হক রিপন, শর্শদী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জানে আলম ভূঞা, পাঁচগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মানিক, ধলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার আহমেদ মুন্সি, ফেনী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সালাহ উদ্দিন ফিরোজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাবেদ হায়দার জর্জ, পৌর যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল ইসলাম পিটু ও পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফুল আলম মোহন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ৩১ অক্টোবর কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর ঢাকায় ফেরার পথে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ফেনী সদর উপজেলার মহিপাল এলাকায় হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। হামলাকারীদের উদ্দেশ্য ছিল খালেদা জিয়াকে হত্যা করা। তার পরিপ্রেক্ষিতে এই বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে বন্ধ হয়ে যায় যানবাহন চলাচল।
একপর্যায়ে যমুনা পরিবহনের একটি বাস ও চৌদ্দগ্রাম ট্রান্সপোর্টের একটি বাসে আগুন দেয়া হয়। এতে প্রায় ৬০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। সেই সময় ঘটনাকে ভিন্ন খাতে চালানোর জন্য মামলার বাদী আবুল কাশেম মিলন, লক্ষ্মীপুরের নেয়ামতপুর এলাকার বাসিন্দা আবদুল মালেক ড্রাইভার, বাঞ্ছানগর এলাকার ফারুক ড্রাইভার, নোয়াখালীর চরজব্বর থানার হাজীপুর এলাকার হেদায়েত উল্যাহ ড্রাইভার ও সুধারাম থানার চর শুল্লকিয়া এলাকার হারুনুর রশিদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বাদীপক্ষের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম বলেন, শুনানি শেষে আদালত পুলিশ সুপার সমমর্যাদার কর্মকর্তাকে তদন্তের মাধ্যমে আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন। মামলা করার পর থেকে বাদী আবুল কাশেম মিলনকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে। এতে তিনি মানসিক চাপে রয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি মিডিয়ার কাছে বিষয়টি তুলে ধরে সবার সহায়তা চাইবেন বলে জানান।