রুহুল কবির রিজভী। ছবি : সংগৃহীত
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে মিরপুর এলাকায় শহিদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিএনপি প্রতিনিধিদল। বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশকে একচোখা নীতিতে ভারত দেখছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘আমরা একটি সংগঠনের অভ্যুদয় দেখছি খুব অল্প কিছুদিন ধরে। গতকাল এই সংগঠনের কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা সবাই যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মী, তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক সেজে এই সংগঠনের মধ্যে ঢুকে সারাদেশে অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে।’
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে মিরপুর এলাকায় শহিদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বুধবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমাদের প্রায় দুই হাজারের মতো সাধারণ মানুষকে, বাচ্চা ছেলেদের গুলি করা হয়েছে, অনেককে হত্যা করা হয়েছে। কই তখন তো ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তর স্টেটমেন্ট দেয়নি? শেখ হাসিনার এই ভয়ংকর নিপীড়নের জন্য, এই রক্তক্ষরণের জন্য একটা স্টেটমেন্ট তো দেননি! একটা বিবৃতি তো দেননি! আজ যখন সরকার এবং সব মানুষ বুঝতে পারছে কোনো একটা ষড়যন্ত্র চক্রান্তের খেলা চলছে, কোনো কিছু একটা পরিকল্পিত ঘটিয়ে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।’
তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্র এখনো থামছে না, ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন ঠিকই কিন্তু তার যে টাকার উৎস এটা এখনো তৃণমূলে অনেকের কাছে নানাভাবে রয়েছে। ওই টাকাগুলোই খরচ করে তারা এলাকার পর এলাকায় অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা করছে।’
রিজভী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিস্টান পাশাপাশি শান্তিতে সহবস্থানে দীর্ঘদিন বাস করছি। আজ কেন পরিকল্পিতভাবে বলা হচ্ছে এখানে হিন্দু সম্প্রদায় নিরাপদ নয়! বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরাট অংশ বুঝতে পারছে কোনো ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত চলছে। কিন্তু তারা নেমে একজন আইনজীবীকে পর্যন্ত হত্যা করার মতো ধৃষ্টতা দেখাচ্ছে, এর জন্য ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তর কোনো বিবৃতি দিলো না, দিলো অস্থিতিশীলতা তৈরির কারণে একজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের জন্য। তিনি বাংলাদেশের নাগরিক, তার প্রতি যদি সরকার অন্যায় করে তাহলে বাংলাদেশের জনগণ সেখানে দাবি তুলতে পারে। তাদের দাবি এখান থেকে হবে। বাইরের কোনো দেশ থেকে এ ধরনের প্রতিবাদ আসছে কেন? এগুলো তো সব রহস্যজনক বিষয়। বাংলাদেশকে স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে তারা (ভারত) মনে হয় বিশ্বাস করতে চায় না। এটা ১৮ কোটি মানুষের দেশ, এই দেশ এভাবে চলতে পারে না। পাশের দেশের পলিসি মেকাররা এটা যেন ভুলে না যান।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘ছাত্র জনতার আন্দোলনে ভারতের অনেক ছাত্র সংগঠন সমর্থন দিয়েছে, সহানুভূতি দেখিয়েছে। কিন্তু ভারতের যে শাসকগোষ্ঠী- এই শাসকগোষ্ঠী আমার কাছে মনে হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট সাম্প্রদায়িক শক্তি। এ কারণেই তারা এক চোখা নীতি অবলম্বন করে বাংলাদেশকে দেখছে।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আমরা বিএনপি পরিবারের উপদেষ্টা আশরাফউদ্দিন বকুল, আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন, সদস্য সচিব মোকছেদুল মোমিন মিথুন, যুবদল নেতা মেহবুব মাসুম শান্ত প্রমুখ।