৫০ প্রার্থীকে হত্যার মিশন নিয়েছে আ.লীগ: রাশেদ খান
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:৫০ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি মিশন নিয়েছে প্রায় ৫০ জন প্রার্থীকে হত্যা করবে। এরই অংশ হিসেবে আমাদের বিপ্লবী যোদ্ধা ও বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর ওসমান হাদি ভাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় গুলি চালানো হয়েছে। অথচ এখনো সেই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়নি।’
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে মহান বিজয় দিবসে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাম্প্রতিক সহিংসতার প্রসঙ্গ টেনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্যের সমালোচনা করে রাশেদ খান আরও বলেন, ‘৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণার আগে প্রশ্ন আসে— তাহলে গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশ, র্যাব ও যৌথ বাহিনী কী করছে?’
তিনি বলেন, ‘এর আগে অপারেশন ডেভিল হান্ট ঘোষণা করা হয়েছিল। এবার ফ্যাসিবাদের দোসর যারা সরকার, উপদেষ্টা পরিষদ ও বিভিন্ন বাহিনীতে রয়েছে, তাদের ধরতে অপারেশন ডেভিল হান্ট-২ ঘোষণা করা উচিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার সংস্কারের কথা বলে ক্ষমতায় এসে বাস্তবে সেই সংস্কার দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। বরং গত ১৬ মাসে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনই দৃশ্যমান হয়েছে। এর ফলেই আজ দেশে গুপ্তহত্যা ও অস্থিতিশীলতা বাড়ছে। রাষ্ট্র পরিচালনায় এই সরকারের অযোগ্যতা, অদক্ষতা ও উপদেষ্টাদের মধ্যে চরম সমন্বয়হীনতা আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। সরকার সবসময় বলেছে, তারা রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের সংস্কার করবে, একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র গড়ে তুলবে—যা হবে আমেরিকা ও ইউরোপের মতো আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থা; কিন্তু বাস্তবে এর কোনো প্রতিফলন জনগণ দেখেনি।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘১৬ মাসে আমরা দেখেছি আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন করা হয়েছে। বিভিন্নভাবে তাদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হওয়ার ফলেই তাদের দুর্বৃত্তরা আজ গুপ্তহত্যায় নেমেছে।’
গণ অধিকার পরিষদের এ নেতা আরও বলেন, ‘স্বাধীনতার যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য—সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার—তা আজও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। মুক্তিযোদ্ধারাও যে ‘নতুন বাংলাদেশ’-এর স্বপ্ন দেখেছিলেন, দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও সেই বাংলাদেশ আমরা গড়তে পারিনি।’
আওয়ামী লীগকে সরাসরি অভিযুক্ত করে তিনি বলেন, ‘যারা নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি দাবি করে, তারাই গণতন্ত্র হত্যা করেছে। ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়েই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভূলুণ্ঠিত হয়েছে।’
রাশেদ খান বলেন, ‘এ কারণেই চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। ওই অভ্যুত্থানে প্রায় দুই হাজার ছাত্র-জনতা শহীদ হয়েছে। নির্বিচারে গুলি করে শিশু, বৃদ্ধ, তরুণ এমনকি মা-বোনদের হত্যা করা হয়েছে। আমরা আর সেই অন্ধকার সময়ে ফিরে যেতে চাই না।’
আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় নির্বাচন প্রসঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, ‘এই নির্বাচন অবশ্যই অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও ফ্যাসিবাদমুক্ত হতে হবে। সরকার যদি জাতিকে এমন একটি নির্বাচন উপহার দিতে পারে, তবেই নতুন বাংলাদেশ গঠনের পথ সুগম হবে।’
এ সময় গণঅধিকার পরিষদের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।



