Logo
Logo
×

রাজনীতি

১৮ দল নিয়ে নতুন জোট

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৪৪ পিএম

১৮ দল নিয়ে নতুন জোট

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে আরেকটি জোট গঠিক হয়েছে। কয়েক ভাগে বিভক্ত জাতীয় পার্টির দুটি অংশের নেতৃত্বে এ জোটের নাম হয়েছে ‘জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট’ (এনডিএফ)। জাতীয় পার্টির আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নেতৃত্বাধীন অংশ দুটিসহ মোট ১৮টি দল থাকছে এই জোটে।

ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে এনসিপি, এবি পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন নতুন জোট গড়ার ঘোষণা দেওয়ার পরদিনই এনডিএফ জোটের ঘোষণা এল। সোমবার রাজধানীর গুলশান-১ নম্বর এলাকার একটি মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে জোটের আত্মপ্রকাশ হয়। এই জোটের ১৮টি দলের মধ্যে ৬টির নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধন রয়েছে।

নতুন জোটের প্রধান উপদেষ্টা করা হয়েছে জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে। সভাপতি হয়েছেন জাতীয় পার্টির (একাংশ) চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। জোটের প্রধান মুখপাত্র হয়েছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। এ ছাড়া ইলিয়াস কাঞ্চনের নেতৃত্বে গড়া নতুন দল জনতা পার্টি বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ারকে জোটের প্রধান সমন্বয়ক করা হয়েছে।

এনডিএফের শরিক দলগুলো হলো জাতীয় পার্টির (জাপা) আনিসুল ইসলামী নেতৃত্বাধীন অংশ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (জেপি), জনতা পার্টি বাংলাদেশ, তৃণমূল বিএনপি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (মহসিন রশিদ), জাতীয় ইসলামিক মহাজোট, বাংলাদেশ স্বাধীন পার্টি, বাংলাদেশ স্বাধীনতা পার্টি, অ্যালায়েন্স ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আন্দোলন, ডেমোক্রেটিক পার্টি, জাতীয় সাংস্কৃতিক জোট, জাসদ (শাহজাহান সিরাজ), ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক পার্টি ও গণ আন্দোলন।

এই জোটের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ব্রুনেই দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নতুন জোটের নেতারা যা বললেন

সংবাদ সম্মেলনের প্রধান অতিথি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু নতুন রাজনৈতিক ফ্রন্ট গঠনের উদ্যোগের প্রশংসার পাশাপাশি শঙ্কাও প্রকাশ করেন, এ নিয়ে যে অতীত অভিজ্ঞতায় তিনি দেখেছেন, এ ধরনের চেষ্টা অনেক সময় ব্যর্থ হয়।

গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার সরকারের এক সময়ের এই মন্ত্রী বলেন, ৫৪ বছরে দেশে অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও মৌলিক অধিকার ও নিরাপদ নাগরিক জীবন নিশ্চিত হয়নি। সরকারগুলো ভয় দেখিয়ে দেশ চালিয়েছে। স্বাধীনতার মূল চেতনাও পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। প্রকৃত স্বাধীনতা হলো নির্ভয়ে কথা বলা ও নিঃশঙ্ক জীবনযাপন—যা এখনো নিশ্চিত নয়।

অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা নিয়ে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, সরকারের মূল দায়িত্ব ছিল রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব প্রশমিত করে অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা। কিন্তু বাস্তবে তারা প্রশাসনিক কাঠামোতে দলীয় প্রভাবমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। অভিযোগ আছে, এই অন্তর্বর্তী সরকার একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক গোষ্ঠীর প্রতি নরম মনোভাব দেখিয়েছে এবং মাঠপর্যায়ে আস্থার সংকট কাটাতে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি। ফলে জনগণের প্রত্যাশা পূরণের বদলে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপরই আস্থাহীনতা আরও বেড়ে গেছে।

সংবাদ সম্মেলনে জোটের ঘোষণাপত্র পড়েন এনডিএফের সভাপতি আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার এবং নির্বাচন কমিশন প্রায়ই বলে, তারা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত এবং শতাব্দীর সেরা নির্বাচন হবে। তারা প্রশাসনিক কী প্রস্তুতি নিয়েছে, তা জানি না; কিন্তু মাঠে বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন আমরা দেখছি না। দুই মাস পর নির্বাচন হলেও মাঠপর্যায়ে তার প্রস্তুতির কোনো বাস্তব প্রতিফলন নেই; বরং জনগণ এখনো সন্দিহান, নির্বাচন হবে কি না।’

বাংলাদেশ এখন গভীর রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় নিমজ্জিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। তাঁর মতে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি, লাগামহীন দ্রব্যমূল্য, রাজপথে অস্থিরতা ও রাজনৈতিক অভিযোগ-প্রতি অভিযোগ নির্বাচনী পরিবেশকে সংকটময় করেছে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন অসম্ভব বলে মনে করেন আনিসুল ইসলাম। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়লে ‘মাফিয়া-নিয়ন্ত্রিত’ নির্বাচন আবার ফ্যাসিবাদকে ফিরিয়ে আনবে। জনগণ পরিবর্তন চায়, তাই নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারকে চাপ দিতে হবে। তিনি মিথ্যা মামলার অভিযোগ তুলে বলেন, এমন পরিবেশে ন্যায়সংগত নির্বাচন সম্ভব নয়। তিনি জোটের শরিক দল জনতা পার্টির মহাসচিব সাংবাদিক শওকত মাহমুদের মুক্তির দাবি জানান।

জোটের প্রধান মুখপাত্র রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, জাতীয় জীবন এক সংকটময় সময় অতিক্রম করছে। সব রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করাই এখন প্রধান দায়িত্ব। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকার সবাইকে নিয়ে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন আয়োজন করবে। কাউকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করলে তা স্থায়িত্ব পাবে না। অতীত অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।’

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন