তৃতীয় রাজনৈতিক জোট গঠন প্রক্রিয়া পিছিয়ে গেল শেষ বৈঠকে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১০:১২ এএম
বিএনপি–জামায়াতের বিকল্প শক্তি হিসেবে নতুন তৃতীয় রাজনৈতিক বলয় গড়ে তোলার উদ্যোগ ঘুরেফিরে আবার অনিশ্চয়তার ধুলায় ঢেকে গেল। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতৃত্বে কয়েকটি রাজনৈতিক দলকে নিয়ে জোট গঠনের আলোচনা অনেকটা পথ পেরোলেও শেষ পর্যায়ে এসে মতানৈক্যের ঠোকাঠুকিতে থেমে গেছে অগ্রগতি।
প্রাথমিক পরিকল্পনায় এনসিপি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি, বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ও ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ) থাকলেও—গণঅধিকার পরিষদ ও জেএসডি যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনাও ঘোরাফেরা করছিল আলোচনায়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে দু’দল নিয়ে ‘থাকা-না থাকা’ দ্বিধা প্রক্রিয়ায় ধাক্কা দেয়।
এনসিপির ভেতর থেকেই উঠে আসে আপ বাংলাদেশকে নিয়ে আপত্তি। দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, রাজনৈতিক জোট মানেই রাজনৈতিক দল—আপ বাংলাদেশ যেহেতু একটি প্ল্যাটফর্ম, সেহেতু তাদের অন্তর্ভুক্তি এখনও অনিশ্চিত। একই সময়ে জেএসডি ও গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে আলোচনাও চলমান, তবে আত্মপ্রকাশের তারিখ আর রূপরেখা চূড়ান্ত হয়নি।
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ জানান, তিন মাস ধরে তাঁরা তৃতীয় জোটের প্রস্তুতিতে কাজ করলেও শেষদিকে এনসিপির হিসাব-নিকাশে রিজার্ভেশন দেখা দেয়। রাজনৈতিক দল নয় এই ব্যাখ্যাকে কেন্দ্র করেই আলোচনায় জট তৈরি হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বুধবার গভীর রাত পর্যন্ত বৈঠকে বসে এনসিপি, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নেতারা। সেখানে গণঅধিকার পরিষদের ভেতর দ্বিধা স্পষ্ট হয়, আর এনসিপিও একটি বিষয়ে ‘আপত্তি’ তোলে—ফলে চূড়ান্ত ঘোষণা স্থগিত থাকে।
এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান ভূঁইয়া মঞ্জু বলেন, জুলাই সনদের ভিত্তিতে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের উদ্দেশ্যে জোট গঠনের কাজ অনেকটাই এগোলেও দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য ও তাৎক্ষণিক নির্বাচনী সমঝোতা—এই দুইয়ের টানাপোড়েনে এখনো ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি। একটি দল অতিরিক্ত সময় চেয়েছে, আরেক দলের যোগদানে নতুন আলোচনা শুরু হয়েছে।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিদারুল ভূঁইয়া জানান, বুধবার রাতের দীর্ঘ বৈঠকেই স্পষ্ট হয়—আরও আলোচনার প্রয়োজন। তাঁর আশা, দুই–তিন দিনের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তির দিকে যাবে।
এদিকে এনসিপির একটি সূত্র বলছে, অন্তর্বর্তী সরকারের দুজন ছাত্র উপদেষ্টার প্রভাবও আলোচনাকে বিপর্যস্ত করেছে। তাঁরা নাকি এনসিপিকে বিএনপির সঙ্গে জোটে নিতে আগ্রহী—কিন্তু এনসিপির বড় অংশ সে পথে হাঁটতে রাজি নয়। এই অভ্যন্তরীণ চাপও জোট গঠনের সিদ্ধান্তকে স্থগিত করেছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।



