‘আমি এই প্রশ্নের উত্তর দেব না’ সাংবাদিককে ফজলুর রহমান
সাব্বির হোসেন, কিশোরগঞ্জ
প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৩৬ পিএম
অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান
দলীয় সব পদ স্থগিত থাকা অবস্থায় বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাথে মিটিংয়ে অংশ নেন। বিষয়টি নিয়ে সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে চ্যানেল আই এর কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি এসকে রাসেল ফোনে জানতে চাইলে তিনি প্রশ্নে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এর আগে গতকাল রবিবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপির কার্যালয়ে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীর হিসেবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে মতবিনিময়ে অংশ নেন ফজলুর রহমান।
দলীয় পদ স্থগিত থাকা অবস্থায় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় অংশ নেওয়া নিয়ে সাংবাদিক এসকে রাসেলের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান বলেন, “আমার আসন থেকে কতজন প্রার্থী ওই মিটিংয়ে ছিল, সেটা আমি জানি না। আমাকে ডেকেছে, আমি গেছি। আর কারা প্রার্থী, সেটা আমি জানি না।”
এরপর সাংবাদিক এসকে রাসেল প্রশ্ন করেন, “দল থেকে তো আপনার সব পদ স্থগিত করা হয়েছিল, এগুলো কি আবার সক্রিয় করা হয়েছে?” ফজলুর রহমান পাল্টা প্রশ্ন করেন, “আপনার বয়স কত?” সাংবাদিক এসকে রাসেল উত্তর দেন, “৩০।” ফজলুর রহমান বলেন, “৩০? আমি যখন এমপি হয়েছি তখন কি আপনার জন্ম হয়েছিল?” সাংবাদিক বলেন, “জি না।”
তখন ফজলুর রহমান বলেন, “তাহলে আমাকে এভাবে প্রশ্ন করা উচিত না। আমার সামনে এসে কথা বলবেন। সাংবাদিক বলেন, “আপনি তো ঢাকায় আছেন, আমি কিশোরগঞ্জে—তাই ফোনে জানতে চাচ্ছিলাম।”
ফজলুর রহমান বলেন, “আমাকে ইটনা-মিঠামইনের এমপি-গিরি নিয়ে প্রশ্ন করা আপনার কাজ না। কিশোরগঞ্জে থেকে আপনি।ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রামের অবস্থা বুঝেন না।”
সাংবাদিক জবাব দেন, “বুঝি, আপনার অবস্থান সেখানে ভালো। ইটনা, অষ্টগ্রামে আপনি জনপ্রিয়।”
এরপর সাংবাদিক আবার বলেন, “আমার প্রশ্ন ছিল—দল কি আপনার স্থগিত পদগুলো পুনরায় সক্রিয় করেছে?”
ফজলুর রহমান বলেন, “এই প্রশ্নের উত্তর আমি আপনাকে দেব না। এত সহজে ফজলুর রহমানকে ফোন করে উত্তর নিয়ে নিবেন ভাবছেন?”
সাংবাদিক বলেন, “আমার বয়স যাই হোক, আমি প্রশ্ন করেছি—আপনি দিতে না চাইলে নাই।”
ফজলুর রহমান বলেন, “আমি কেন আপনার বয়স জিজ্ঞেস করেছি জানেন? কারণ আপনি কিশোরগঞ্জের মানুষ, তাই বললাম। অন্য জায়গার সাংবাদিক হলে বলতাম না। আপনি আমাকে চিনতে হবে।”
সাংবাদিক বলেন, “আমিতো আপনাকে চিনি। আপনি জনপ্রিয় নেতা, বিএনপি থেকে বা স্বতন্ত্র—যেভাবেই দাঁড়ান, জিতবেন জানি। কিন্তু প্রশ্নটা ছিল, আপনার পদগুলো কি ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে?”
ফজলুর রহমান বলেন, “এই প্রশ্নটা আপনি করতে পারেন না।”
সাংবাদিক বলেন, “আমি প্রশ্ন করেছি, আপনি উত্তর দিতে না চাইলে নাই।”
ফজলুর রহমান শেষমেশ বলেন, “আমি এই প্রশ্নের উত্তর দেব না।”
সাংবাদিক কথোপকথন শেষ করেন, “আপনি উত্তর দেবেন না—ধন্যবাদ, আসসালামু আলাইকুম।”
উল্লেখ্য, গত ২৬ আগস্ট বিএনপির পক্ষ থেকে অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানের সব দলীয় পদ তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। এর আগে, ২৪ আগস্ট তার নামে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করে তার দল বিএনপি। নোটিশের লিখিত জবাব না দিয়ে তিনি সময় বাড়ানোর আবেদন করেন, যা বিবেচনায় নিয়ে আরও ২৪ ঘণ্টা সময় বাড়ানো হয়। পরে তিনি নোটিশের জবাব দিলেও তা দলীয় হাইকমান্ডকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। ফলস্বরূপ, অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানের সব দলীয় পদ তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়।



