সংসদে নারী, সংখ্যালঘু ও চরাঞ্চলের জনগোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষার দাবি
রাজু মোস্তাফিজ,কুড়িগ্রাম
প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:১৭ পিএম
ছবি-যুগের চিন্তা
আগামী জাতীয় নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে সংসদীয় আসনে নারী আসন বৃদ্ধি, যুব প্রতিনিধিত্ব বাড়ানো, সংখ্যালঘু ও কুড়িগ্রামের প্রান্তিক চরাঞ্চলের মানুষের ভোটাধিকারের নিশ্চয়তা এবং নির্বাচনের প্রচার প্রচারণায় পরিবেশ রক্ষার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা আহ্বান জানিয়েছেন।
পেশিশক্তির ব্যবহার ও ব্যক্তিগত চরিত্র হনন করে নির্বাচনী প্রচার বন্ধ করে ভোটারদের অংশগ্রহণে উৎসব মুখর পরিবেশে দ্রুত গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানানো হয়। মঙ্গলবার কুড়িগ্রামে জেলা পর্যায়ের সংলাপ ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিতকরণে নাগরিক সমাজের প্রত্যাশা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে তাঁরা এসব প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেন।
কুড়িগ্রাম জেলা সদরের উপজেলা অফিসার্স ক্লাব মিলনায়তনে বেলা ১১টা থেকে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনে নাগরিক সমাজের প্রত্যাশা শীর্ষক আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি(এনসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ন আহবায়ক ড. আতিক মোজাহিদ বলেন, যখন একটি রাষ্ট্রে গুড গভর্নেন্স থাকবে তখন সংখ্যালঘু, নারী-পুরুষ সবাই সমান হবে। আমরা সবাই মিলে বাংলাদেশ হতে চাই।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দলের পক্ষ থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৪০০ আসনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সেখানে ১০০টি আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে এবং সেই আসনগুলোতে সরাসরি নির্বাচন দিতে হবে।’
কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির যুগ্ন আহ্বায়ক হাসিবুর রহমান হাসিব বলেন, আমাদের ৩১ দফায় নারীর ক্ষমতায়ন ও নারীর মর্যাদার কথা বলা আছে। আগামী নির্বাচনে আমাদের দল নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনের পাশাপাশি দলীয় মনোনয়নে নারীদের জন্য সুযোগ রাখবে। অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনে চরাঞ্চলের প্রান্তিক জনগোষ্ঠি, সংখ্যালঘু, যুব সমাজের প্রতিনিধিরা আরও বাড়ানো হবে।
জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক মাওলানা আবদুল মতিন ফারুকী বলেন, আমরা সকল আসনে প্রার্থী দিয়েছি। সরকার যে সময়েই নির্বাচন দিক আমরা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছি।
বাংলাদেশ সমাজতান্তিক দল বাসদের জেলা সমন্বয়ক ফুলবর রহমান বলেন, ‘ধনতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় জাতীয় সংসদ দিন দিন কোটিপতির ক্লাবে পরিনত হচ্ছে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কুড়িগ্রাম জেলা শাখার জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি অধ্যক্ষ নুর বখত বলেন, আজ যুবকরা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য উম্মুখ হয়ে আছে। আমরা মনে করি প্রত্যেক দলে অন্তপক্ষে ২০ শতাংশ যুবকদের অংশগ্রহণের জন্য সংরক্ষিত রাখা উচিত।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শরিফুল ইসলাম পাটোয়ারী বলেন, শুধু সেনাবাহিনীর ওপর ভরসা করে জাতীয় নির্বাচন করা সম্ভব নয়। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বর্তমানে নাজুক পরিস্থিতিতে রয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের সক্ষমতা বৃদ্ধি করে তারপর নির্বাচনের আয়োজন করা হলে সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমুলক নির্বাচন হবে।
সচেতন নাগরিক কমিটি(সনাক) সভাপতি শাকিলা শারমিন বন্যা বলেন, ‘সনাক সঠিক সময়ে সচ্ছ ও কারচুপি মুক্ত অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক(সুজন) জেলা আহবায়ক খাইরুল আনাম বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি শুধু কাগজে কলমে না থেকে জনগণের কল্যাণে বাস্তবমুখি হোক।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি রওশন আরা বেগম বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে নারীদের জন্য অতিরিক্ত ১০০টি সংরক্ষিত আসনে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধিত্বের দাবী রাখছি।
জেলা যুব প্ল্যাটফর্মের সদস্য কলি রাণী তার বক্তব্যে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে যুব প্রতিনিধিদের অংশগ্রহন, রাজনৈতিক দলের প্রচার প্রচারণায় কাগজের ব্যবহার কমিয়ে ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচার প্রচারণা চালানো, গাছে পেরেক ঠুকে নির্বাচনী প্রচারণা বন্ধ, উচ্চ শব্দে মাইক বাজিয়ে প্রচারণা বন্ধের দাবী জানান।
বৈঠকের শুরুতে নাগরিক সমাজ সংস্থাগুলোর দেওয়া জাতীয় নির্বাচন নিয়ে প্রত্যাশা বিষয়ক সুপারিশমালা পাঠ করেন হাব এর সভাপতি সাইদা ইয়াসমিন রুপা।



