আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীসহ ১১ জন ডিবি হেফাজতে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২৫, ০২:২৮ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী ও কাদের সিদ্দিকীর ভাই আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান (কার্জন) সহ অন্তত ১১ জনকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের ডিআরইউ (ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি) প্রাঙ্গণ থেকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা, আইনজীবী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রয়েছেন বলে জানা গেছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) আসাদুজ্জামান বলেন, ডিআরইউ থেকে কয়েকজনকে শাহবাগ থানায় আনা হয়েছিল। শাহবাগ থানার এসআই রাশেদ জানান, এখন তো এখান থেকে তাদের নিয়ে যাওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। গ্রেপ্তার দেখানো হবে নাকি ছেড়ে দেওয়া হবে, সেটা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে। পরে শাহবাগ থানার ওসি নিশ্চিত করেন যে আটকদের ডিবি কার্যালয়ে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে সকালে ডিআরইউর শফিকুল কবির মিলনায়তনে ‘আমাদের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের সংবিধান’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে সংগঠন ‘মঞ্চ ৭১’। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি রোধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান রক্ষার উদ্দেশ্যে এটি ছিল সংগঠনটির প্রথম কর্মসূচি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল সংবিধান প্রণয়ন কমিটির চেয়ারম্যান ও গণফোরামের সাবেক সভাপতি ড. কামাল হোসেনের, তবে তিনি আসেননি।
আলোচনায় বক্তব্য দিতে গিয়ে অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান (কার্জন) অভিযোগ করেন, দেশের সংবিধানকে ছুড়ে ফেলার ষড়যন্ত্র চলছে, এর পেছনে রয়েছে জামায়াত-শিবির ও এনসিপি। অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করছে।
তার বক্তব্য শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একদল যুবক ‘জুলাইয়ের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘লীগ ধর, জেলে ভর’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে দিতে মিলনায়তনে প্রবেশ করে। তারা ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে এবং উপস্থিত ব্যক্তিদের অবরুদ্ধ করে রাখে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ‘জুলাই যোদ্ধা’ ব্যানারের যুবকরা মিলনায়তনে প্রবেশ করে লতিফ সিদ্দিকীসহ অংশগ্রহণকারীদের ঘিরে ফেলে এবং নতুন লোকজনকে ভেতরে ঢুকতে বাধা দেয়। মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা বলেন, সব দল-মতের মুক্তিযোদ্ধাকে এখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ ২০–২৫ জন যুবক এসে হইচই শুরু করে এবং আমাদের ঘিরে ফেলে। তবে তারা শারীরিক আক্রমণ করেনি।
দুপুর সোয়া ১২টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লতিফ সিদ্দিকীসহ কয়েকজনকে ভ্যানে তুলে নিয়ে যায়। রমনা বিভাগের এডিসি আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। ঘটনাস্থলে ভাঙা একটি টেবিল পড়ে থাকতে দেখা যায় এবং উপস্থিতদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে।



