পাকিস্তানের সঙ্গে সুসম্পর্কে জোর দিল এনসিপি
স্টাফ রিপোর্টার :
প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২৫, ০৯:০১ পিএম
ছবি-সংগৃহীত
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) মনে করছে, অতীতের বৈরী সম্পর্ক পেছনে ফেলে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার সুযোগ রয়েছে। তবে এ সম্পর্ক এগিয়ে নিতে ১৯৭১ সালের অমীমাংসিত বিষয়গুলো সমাধান করতেই হবে বলে মত দিয়েছে দলটি।
শনিবার বিকেলে ঢাকায় পাকিস্তান হাইকমিশনে সফররত পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের সঙ্গে সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ করে। বৈঠক শেষে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন সাংবাদিকদের জানান,“পাকিস্তান নিয়ে বাংলাদেশের জনগণের যে ধারণা, সেটি আমরা তাদের কাছে উপস্থাপন করেছি। সম্পর্ক উন্নয়নে জনগণের পারসেপশনকে অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা মনে করি, বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের যেকোনো সম্পর্ক বৃদ্ধির আগে ’৭১ ইস্যুকে ডিল করা জরুরি।”
’৭১-এর অমীমাংসিত ইস্যু
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে তিনটি অমীমাংসিত বিষয় রয়েছে—
একাত্তরের গণহত্যার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা।
আটকে পড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন।
অবিভাজিত সম্পদে বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যা প্রদান।
এপ্রিল মাসে ঢাকায় দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকেও বিষয়গুলো উত্থাপন করা হয়। আগামীকাল রোববার দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকেও ’৭১ ইস্যু আলোচনায় আসবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, “আমরা তাদের বলেছি, ’৭১ বিষয়টি দ্রুত সমাধান করা উচিত। তারা বলেছে, তারা এতে প্রস্তুত।”
শিক্ষা, সংস্কৃতি ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক
আখতার হোসেন জানান, বৈঠকে বাংলাদেশ–পাকিস্তান সম্পর্ককে শিক্ষা, অর্থনীতি ও সংস্কৃতি খাতে এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে সমতার ভিত্তিতে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার ওপরও গুরুত্ব দেওয়া হয়।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী আরও জানান, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম, প্রতিরক্ষা খাতের উন্নয়ন এবং ওষুধশিল্প ও নদীসম্পর্কিত সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা হয়। পাশাপাশি ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪ সালের গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির পরিবর্তন প্রসঙ্গেও মতবিনিময় করা হয়েছে।
বৈঠকে সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করার বিষয়েও আলোচনা হয়। নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন,“ভারতের কারণে সার্ক নিষ্ক্রিয় হয়ে আছে। দক্ষিণ এশিয়ায় সার্ককে কীভাবে আরও সক্রিয় করা যায়, তা নিয়েও আমাদের আলোচনা হয়েছে। পাকিস্তানও একটি পরমাণু শক্তিধর দেশ, ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় তাদের প্রভাব রয়েছে।”



