নির্বাচনের অনিশ্চিয়তা বাড়াচ্ছে জামায়াত আর এনসিপি
অনলাইন ডেস্ক :
প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০২৫, ০৭:০০ পিএম
ছবি-সংগৃহীত
প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস আসন্ন নির্বাচন নিয়ে অনড়। সেনাবাহিনী, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতও একই সুরে নির্বাচন চায়। বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলও এই দাবির সঙ্গে একমত। তবে নির্বাচন ঘিরে সংশয় তৈরি করছে জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি—নতুন নতুন শর্ত জুড়ে অনিশ্চয়তা বাড়াচ্ছে তারা।
সময়ের সাথে সাথে এই অনিশ্চয়তা ঘনীভূত হচ্ছে। কেউ কেউ মনে করছেন, ডাকসু নির্বাচন থেকেই ভবিষ্যৎ জাতীয় নির্বাচনের ইঙ্গিত মিলতে পারে। জরিপগুলো বলছে, এ অবস্থায় নির্বাচন হলে বিএনপি এগিয়ে থাকবে—আর এখানেই মূল জটিলতা। পেছন থেকে সক্রিয় রয়েছে উগ্রবাদী শক্তি, যারা নির্বাচন নয়, অন্যভাবে ক্ষমতায় আসতে চায়।
জামায়াত ও এনসিপি কখনো পিআর পদ্ধতি, কখনো গণভোট, আবার কখনো গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি তুলে পরিস্থিতি জটিল করছে। ঐকমত্য কমিশনও নতুন ইস্যু টেনে সময়ক্ষেপণ করছে। যদিও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন—দিনের শেষে এসব শর্তের কারিগররা ব্যর্থ হয়ে মঞ্চ ছাড়তে বাধ্য হবেন।
প্রফেসর ইউনূস উপদেষ্টাদের সাফ জানিয়ে দিয়েছেন—ঘোষিত সময়ে নির্বাচন না হলে তিনি দায়িত্বে থাকতে পারবেন না। একসময় যারা নির্বাচনবিরোধী ছিলেন, তারাই এখন নির্বাচনের পক্ষে কণ্ঠ মিলিয়েছেন। কিন্তু তাদের বিভক্তি, দুর্নীতির অভিযোগ এবং অকার্যকর প্রশাসনিক ভূমিকা ইউনূসের জনপ্রিয়তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
সরকার ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে। অনেক সিদ্ধান্তই কাগজে সীমাবদ্ধ থেকে যাচ্ছে। কাছের লোকদের পদত্যাগের পরামর্শও গুরুত্ব পাচ্ছে না। ফলে হতাশায় ভুগছেন ইউনূস। সহকর্মীদের কাছে তিনি বলছেন—আর হারতে চান না। তার ভাবমূর্তি প্রতিদিন ঝাপসা হচ্ছে, সংকট ঘনীভূত হচ্ছে।
সম্প্রতি এ কোরাসে যুক্ত হয়েছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওয়েব দুনিয়ায় বার্তা পাঠিয়ে তিনি দাবি করছেন—ইউনূসের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না, তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন জরুরি। বিদ্রূপাত্মকভাবে যিনি একদিন এই ব্যবস্থা বাতিল করেছিলেন, তাকেই এখন সেই দাবিতে সরব হতে হচ্ছে।
ঢাকার ভেতরে ও বাইরে তার গোপন যোগাযোগ বাড়ছে। তিনি নেতাদের আশ্বাস দিচ্ছেন—ইউনূসকে আর বেশি সময় টিকতে দেওয়া হবে না। যদিও পরিস্থিতি আপাত শান্ত, তবে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব বাড়তে থাকলে হঠাৎ অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা সতর্ক করছেন—অভ্যুত্থান ঠেকানোর অন্যতম অস্ত্র হচ্ছে গুজব। আর এই মুহূর্তে গুজবই হয়ে উঠছে নিত্যদিনের সঙ্গী। এভাবেই মিশরের পরিস্থিতি বদলে গিয়েছিল, যার পরিণতি আমরা সবাই জানি।
শেষ পর্যন্ত একটি প্রশ্নই এখন বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে—নির্বাচন ছাড়া বিকল্প কী? নির্বাচন না হলে দেশ আরও বিভক্ত হবে, ষড়যন্ত্রকারীরা সুযোগ নেবে, আর অরাজকতা বাড়বে। সূত্র : অনলাইন



