Logo
Logo
×

মতামত

ভিডিও ভাইরাল : সেই ছাত্রী পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পেতে পারেন

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৫, ১০:৪৮ এএম

ভিডিও ভাইরাল : সেই ছাত্রী পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পেতে পারেন

ছবি - সংগৃহীত

এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর প্রথম দিনই ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে হৃদয়বিদারক এক ঘটনা ঘটেছে। ঢাকা শিক্ষাবোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক ছাত্রী মায়ের অসুস্থতার কারণে সময়মতো পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছুতে পারেননি। দেরি হওয়ায় তাকে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেননি দায়িত্বরতরা। এ সময় ওই ছাত্রী পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকাল ১০টায় সারাদেশে একযোগে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়। ওই ছাত্রীর পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল রাজধানীর সরকারি মিরপুর বাঙলা কলেজ। কিন্তু মায়ের মেজর স্ট্রোকের কারণে কেন্দ্রে পৌঁছাতে তার দেড় ঘণ্টা দেরি হয়। শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ মেলেনি তার। পরীক্ষাকেন্দ্রের গেটের বাইরে দীর্ঘসময় অপেক্ষায় থেকে ফিরে যান ওই পরীক্ষার্থী।

এরপর দুপুরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই শিক্ষার্থীর পরীক্ষা না দিতে পারার ভিডিও ভাইরাল হয়। ভিডিওতে তাকে কেন্দ্রের সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদতে দেখা যায়। কিন্তু কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও অন্য দায়িত্বরতরা জানান, নিয়মের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ জানান অনেকে। অনেকে সমালোচনাও করেন।


এদিকে অসুস্থ মাকে হাসপাতালে পৌঁছে দিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেরি হওয়ায় প্রথম দিনের এইচএসসি পরীক্ষায় রাজধানীর সরকারি মিরপুর বাঙলা কলেজ কেন্দ্রের এক শিক্ষার্থীর পরীক্ষা না দিতে পারার ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে।
এ বিষয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা সিআর আবরার বলেন, “মানবিক বিবেচনায় ওই শিক্ষার্থীর বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে। বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা নেয়ার বিষয়টি পাবলিক পরীক্ষা গ্রহণ সংক্রান্ত আইন ও বিধির আলোকে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। তার এ দুঃসময়ে আমরাও সমব্যথী। এ পরীক্ষার্থীকে উদ্বিগ্ন না হওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।

ওই শিক্ষার্থী তার এই পরীক্ষাটি দেওয়ার সুযোগ পেতে পারেন বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নেতা রুহুল কুদ্দুস কাজল। তিনি এ নিয়ে বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দিয়েছেন।

তিনি লিখেছেন, আলহামদুলিল্লাহ। এইচএসসি পরীক্ষার্থী আনিসার সঙ্গে আমার মাত্র কথা হয়েছে। তার নাম আনিসা আহমেদ। আনিসার অসুস্থ মা ও তার কলেজ, ঢাকা শিক্ষাবোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. আসাদুজ্জামান স্যারের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। বাঙলা কলেজের জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কর্মী শিব্বির আহমেদ উসমানি আমাকে যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছেন।

আনিসার বাবা দুই বছর আগে ইন্তেকাল করেছেন। অসুস্থ মাকে দেখাশোনার জন্য আনিসাই একমাত্র অবলম্বন। শিক্ষকরা এই ছাত্রীকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছেন। আজও তারা শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সেটা আজ হয়নি। তারা বিশেষ বিবেচনায় আনিসার আজকের পরীক্ষাটি পরবর্তীতে গ্রহণের চেষ্টা করবেন।’

এ আইনজীবী আরও লিখেছেন, আমি আমার শেষ পদক্ষেপ হিসেবে আইনগত সহযোগিতা করার বিষয়টি আনিসা, তার মা ও অধ্যক্ষ স্যারকে জানিয়েছি। একই সঙ্গে ২০০০ সালে মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১৩২ শিক্ষার্থীর পরীক্ষা দেওয়া সংক্রান্ত পূর্বের মামলার নজির তাদের জানিয়ে রেখেছি। তারা আশ্বস্ত হয়েছেন। মেয়েটি যেন বাকি পরীক্ষাগুলো নিশ্চিন্তে দিতে পারে, সেটি ব্যবস্থা করার জন্য তার মা ও অধ্যক্ষ স্যারকে বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছি।

তিনি লিখেছেন, আমার ফেসবুক পোস্টের পর সবাই যেভাবে মেয়েটির প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন, আমি বিশ্বাস করি, ঢাকা শিক্ষা বোর্ড, শিক্ষা উপদেষ্টা মানবিক বিবেচনায় আনিসার পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করে তার শিক্ষাজীবন অব্যাহত রাখতে সহযোগিতা করবেন। আনিসাকে যেন আদালতের দ্বারস্থ হতে না হয়, সেটা আমার প্রত্যাশা।

এদিকে, ওই পরীক্ষার্থীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মেয়েটির বাবা নেই। বৃহস্পতিবার সকালে তার মা মেজর স্ট্রোক করেন। পরিবারে অন্য কেউ না থাকায় মেয়েটি তার মাকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটে যান। পরে হাসপাতাল থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রে যেতে তার অনেকটা দেরি হয়ে যায়।

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন