অহেতুক কতগুলো মূল্যবান জীবন ঝরে গেল : প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২৪, ০৮:০২ পিএম
জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : সংগৃহীত
‘কিছু মহল কোটা আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ঘটনা খুবই বেদনাদায়ক ও দুঃখজনক। আন্দোলনের ফলে অহেতুক কতগুলো মূল্যবান জীবন ঝরে গেল। আপনজন হারানোর কষ্ট আমার চেয়ে আর কেবা বেশি জানে।’
বুধবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে এ নিন্দা জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আন্দোলনের শুরু থেকেই সরকার ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। আন্দোনকারীদের নিরাপত্তায় পুলিশ সহযোগিতা করেছে। রাষ্ট্রপতি বরারবর স্মারকলিপি দিতে সুযোগ করে দেওয়া হয়। পরিতাপের বিষয় হলো কিছু মহল আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। চট্টগ্রামে ভবন থেকে ছাত্রদের নিচে ফেলে দেয়া হয়েছে। উপাচার্যদের বাসভনে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়। মেয়েদের হলে আক্রমণ ও লাঞ্ছিত করা হয়েছে।’
আন্দোলন ঘিরে হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘যা ঘটেছে তা কাম্য ছিল না। ভবন থেকে ছাত্রদের নিচে ফেলে দেয়া হয়। উপাচার্যদের বাসভনে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়। মেয়েদের হলে আক্রামণ করা হয়, তারা লাঞ্ছিত হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি যারা কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত তাদের সঙ্গে সন্ত্রাসীদের কোনো সম্পর্ক নেই।’
সন্ত্রাসীরা আন্দোলনের মধ্যে ঢুকে সংঘাত ও নৈরাজ্য পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে। হত্যাকাণ্ডসহ যেসব অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে, এ নিয়ে বিচারবিভাগীয় তদন্ত করা হবে।’ কোটা আন্দোলন ঘিরে নিহতদের পরিবারের জীবন জীবিকার জন্য যে ধরনের সহযোগিতা দরকার, তা করা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ ঘটনায় সন্ত্রাসী যেই হোক না তারা যেন উপযুক্ত শাস্তি পায় সেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ কোটা সংস্কার নিয়ে আদালতের রায় আসা পর্যন্ত আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরতে বলেন প্রধানমন্ত্রী। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সরকার হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করেছে। আপিল আদালতে শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
আদালত শিক্ষার্থীদের কোনো বক্তব্য থাকলে তা শোনার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন। এই আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের সুযোগ রয়েছে। এ সুযোগ থাকা সত্ত্বেও রাস্তায় আন্দোলনে নেমে দুষ্কৃতকারীদের সঙ্ঘাতের সুযোগ করে দেবেন না। সর্বোচ্চ আদালতের রায় আসা পর্যন্ত ধৈর্য ধরার জন্য আমি সবাইকে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।
আমার বিশ্বাস, উচ্চ আদালত থেকে আমাদের ছাত্রসমাজ ন্যায়বিচারই পাবে। তাদের হতাশ হতে হবে না।