Logo
Logo
×

জাতীয়

শেয়ার কারসাজি : বিকন ফার্মার এমডিসহ ৫ জনকে জরিমানা

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২৫, ১১:৪৪ পিএম

শেয়ার কারসাজি : বিকন ফার্মার এমডিসহ ৫ জনকে জরিমানা

বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ এবাদুল করিম

পুঁজিবাজারে শেয়ারের দাম বাড়ানোর কারসাজির ঘটনায় জেমিনি সি ফুড লিমিটেডের বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়ে ৫ জনকে মোট ৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ এবাদুল করিম ও তার পরিবারের সদস্যরা।

২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৭ মে পর্যন্ত সময়ের মধ্যে জেমিনি সি ফুডের শেয়ারের দাম ৩৪১.৭ টাকা থেকে ৯৩৪.৪ টাকায় নিয়ে যাওয়া হয়, যা ১৭৩.৪৬% বৃদ্ধি। বিএসইসির তদন্তে নিশ্চিত হয় যে, শেয়ারের দাম ব্যবসায়িক উন্নতির কারণে নয়, বরং কারসাজির মাধ্যমে বাড়ানো হয়েছে।

এ ঘটনায় মোহাম্মদ এবাদুল করিমকে ১১ লাখ টাকা, তার মেয়ে রিসানা করিমকে ২.১২ কোটি টাকা, ছেলে উফাত করিমকে ১.৪১ কোটি টাকা, শ্যালক সোহেল আলমকে ১০ লাখ টাকা এবং ফাতেমা সোহেলকে ১১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৭ মে পর্যন্ত সময়ে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি জেমিনি সি ফুডের শেয়ারের দাম কারসাজি করে বাড়ানোর দায়ে ৫ ব্যক্তিকে জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে মোহাম্মদ এবাদুল করিমকে ১১ লাখ টাকা, তার মেয়ে রিসানা করিমকে ২ দশমিক ১২ কোটি টাকা, তার ছেলে উফাত করিমকে ১ দশমিক ৪১ কোটি টাকা, তার শ্যালক সোহেল আলমকে ১০ লাখ টাকা ও ফাতেমা সোহেলকে ১১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সে হিসেবে আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার কারসাজির জন্য মোট ৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

কারসাজিতে জড়িতদের পরিচিতি

বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ এবাদুল করিম। তিনি ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনে নির্বাচিত হন। ওরিয়ন গ্রুপের কোম্পানিগুলোর পর্ষদে তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। এবাদুল করিমের ছেলে উফাত করিম। তিনি কোম্পানিটির পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আর তার মেয়ে রিসানা করিম। তিনি কোম্পানিটির ম্যানেজমেন্টে নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া মোহাম্মদ এবাদুল করিমের শ্যালক সোহেল আলম। তিনি আগে বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের পরিচালক ছিলেন। ফাতেমা সোহেল মোহাম্মদ এবাদুল করিমের আত্মীয়। এর আগে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানি খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রিজ ও ওরিয়ন ইনফিউশন লিমিটেডের শেয়ার কারসাজি করার দায়ে মোহাম্মদ এবাদুল করিমকে বড় অঙ্কের জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রী নুরুন নাহার, তার মেয়ে ও তার নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোকেও বড় অঙ্কের জরিমানা করা হয়।

২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৭ মে পর্যন্ত সময়ে যোগসাজশ করে জেমিনি সি ফুডের শেয়ারের মূল্য বাড়ানো হয়। আলোচ্য সময়ের মধ্যে কোম্পানির শেয়ারের দাম ৩৪১ দশমিক ৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৩৪ দশমিক ৪ টাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। ফলে আলোচ্য সময়ে কোম্পানির শেয়ারের দাম ৫৯২ দশমিক ৭ টাকা বা ১৭৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ বাড়ে।

উপস্থাপিত অভিযোগসমূহ সঠিক ও ইচ্ছাকৃত এবং কর্মকাণ্ডের ফলে পুঁজিবাজারের সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, যা পুঁজিবাজার উন্নয়নের পরিপন্থি। সেহেতু অভিযুক্তদের ব্যাখ্যা কমিশনের কাছে গ্রহণযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়নি। অভিযুক্তদের কর্মকাণ্ড সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিনেন্স, ১৯৬৯-এর সেকশন ১৭(ই)(২), ১৭(ই)(৩) এবং ১৭(ই)(৫) লঙ্ঘন করেছে, যা সিকিউরিটিজ আইনের পরিপন্থি। যেহেতু অভিযুক্তদের উপযুক্ত কর্মকাণ্ড সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিনেন্স, ১৯৬৯-এর সেকশন ২২ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ, সেহেতু তাদের জরিমানা করা হলো।

বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালাম বলেন, ‘বিএসইসি বিভিন্ন কার্যক্রমে কোনো অসংগতি রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। পরিদর্শন প্রতিবেদনে কোনো অসংগতি পাওয়া গেলে সে অনুযায়ী কমিশন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। এটা বিএসইসির রুটিন ওয়ার্ক। এখানেই তাই হয়েছে।’

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন