প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশকে সুদমুক্ত ঋণসহ ৪টি ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছে চীন। এরই অংশ হিসেবে ২ বিলিওন মার্কিন ডলার দেবে দেশটির সরকার। রবিবার (১৪ জুলাই) গণভবনে চীন সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অনুদান, সুদমুক্ত ঋণ, রেয়াতি ঋণ ও বাণিজ্যিক ঋণে চারটি ক্ষেত্রে সহায়তায় রাজি হয়েছে। এই চারটি প্যাকেজের আওতায় চীন বাংলাদেশকে দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ প্রদানে সম্মত হয়েছে।

চীনা ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে আবাসন এবং হসপিটালিটি খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দ্বিপক্ষীয় সফরে আমি গত ৮ জুলাই বেইজিং পৌঁছলে বিমানবন্দরে আমাকে লালগালিচা সংবর্ধনার মাধ্যমে স্বাগত জানানো হয়। ৯ জুলাই সকালে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (এআইআইবি) প্রেসিডেন্ট জিন লিকুন আমার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি এআইআইবিকে বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, নদী খনন, জলবায়ু পরিবর্তনসহ উপযোগী খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানাই। এরপর আমি ‘দ্য রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার : সামিট অন ট্রেড, বিজনেস অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট অপরচুনিটিজ বিটুইন বাংলাদেশ অ্যান্ড চায়না’ শীর্ষক একটি ব্যবসায়িক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করি। সেখানে বাংলাদেশ ও চীনের ব্যবসায়ীরা অংশ নেন।

তিনি আরো বলেন, সম্মেলনে আমি চীনা ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে বিশ্বের সবচেয়ে উদার বিনিয়োগ ব্যবস্থার সুবিধা নিয়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানাই। এ সময় অবকাঠামো, আইসিটি, পর্যটন, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ জ্বালানি খাত, জলবায়ু-সহনশীল স্মার্ট ফার্মিং, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সবুজ প্রযুক্তি ও উন্নয়ন খাতে বৃহত্তর বিনিয়োগের আহ্বান জানাই।

এর আগে গত ৮ জুলাই চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের আমন্ত্রণে শেখ হাসিনা এক সরকারি সফরে বেইজিং যান। ৮ থেকে ১০ জুলাই বেইজিংয়ে অবস্থানকালে প্রধানমন্ত্রী চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন।

এছাড়া শেখ হাসিনা গ্রেট হল অব দ্য পিপলে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সঙ্গেও দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। বুধবার (১০ জুলাই) সকালে প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠকের পর বাংলাদেশ ও চীন ২১টি সহযোগিতার নথিতে সই ও নবায়ন করে। এসবের বেশিরভাগই সমঝোতা স্মারক। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সফর শেষ করে দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা  ।

বৈঠকে এশিয়ার এই দুদেশের মধ্যে শক্তিশালী উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়। বাংলাদেশ ও চীন উভয়ই মুক্তবাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) বিষয়ে যৌথ সম্ভাব্যতা সমীক্ষার সমাপ্তিসহ সাতটি ঘোষণাপত্র সই করেছে।