চীন সফরে যাচ্ছেন ড. ইউনূস: কূটনৈতিক স্বীকৃতি ও বিনিয়োগ আশ্বাসের প্রত্যাশা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৫, ০৭:২৮ পিএম
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ফাইল ছবি
আগামী সপ্তাহে চীন সফরে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সফরকালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংসহ শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। বুধবার (১৯ মার্চ) হংকংভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যে চীনের স্বীকৃতি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করতেই ড. ইউনূসের এই সফর। ২৭ মার্চ তিনি হাইনান প্রদেশে বোয়াও ফোরামের উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগ দেবেন এবং ২৮ মার্চ প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এছাড়া, পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করবে।
সফরের মূল এজেন্ডা
ড. ইউনূস ও চীনা কর্মকর্তাদের আলোচনায় বিনিয়োগ নিশ্চয়তা অন্যতম বড় এজেন্ডা থাকবে। চীন ২০০৬ সালে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার হয় এবং গত বছর দুই দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ ২৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়।
এছাড়া তিস্তা প্রকল্প নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনাও রয়েছে। চীন আগে এ প্রকল্পে সহায়তার আগ্রহ দেখালেও ভারত বিষয়টি নিজেদের হাতে রাখতে চেয়েছে। বাংলাদেশ এখন এই কৌশলগত প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে চীনের সহযোগিতা চাইতে পারে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক লাইলুফার ইয়াসমিন বলেছেন, "তিস্তা প্রকল্প কেবল অর্থনৈতিক নয়, এটি রাজনৈতিকভাবেও গুরুত্বপূর্ণ। চীনের সঙ্গে আলোচনায় অগ্রগতি হলে তা বাংলাদেশের জন্য বড় কৌশলগত অর্জন হবে।"
বাংলাদেশ-চীন কূটনৈতিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ
শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর চীন বাংলাদেশে তাদের বিনিয়োগ নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল, বিশেষ করে ৫ বিলিয়ন ডলার অপরিশোধিত ঋণ নিয়ে। ড. ইউনূস চীনকে আশ্বস্ত করবেন যে, রাজনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও তাদের বিনিয়োগ নিরাপদ।
বিশ্লেষকদের মতে, চীন এ সফরে কিছু প্রতিশ্রুতি দিতে পারে, তবে বেশিরভাগ বড় সিদ্ধান্ত নির্বাচিত সরকারের জন্য রেখে দেবে।
এই সফর কেবল অর্থনৈতিক নয়, দক্ষিণ এশিয়ায় চীন-ভারত ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রেক্ষাপটেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।



