কোটা বাতিলের দাবি
বাংলা ব্লকেডের বদলে আজ গণপদযাত্রা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৪, ১০:০২ এএম
কোটা সংস্কারের দাবিতে গণপদযাত্রা। ফাইল ফটো
সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে কোটা সংস্কারের দাবিতে আজ রবিবার ‘বাংলা ব্লকেড’-এর পরিবর্তে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান এবং গণপদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে সংবাদ সম্মেলনে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
অন্যদিকে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশের যানবাহন ভাঙচুর, পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা এবং মারধরের অভিযোগে গত শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে শাহবাগ থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় ‘অজ্ঞাতপরিচয় অনেক সংখ্যক শিক্ষার্থী’কে আসামি করা হয়েছে। গতকাল শনিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আলী হায়দার চৌধুরী মামলার এজাহার গ্রহণ করে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২১ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন। এ মামলা প্রত্যাহারে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
এদিকে সরকারের পক্ষ থেকে গতকাল কোটার প্রয়োজনীয়তা আছে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, এ ব্যাপারে আদালত যে নির্দেশনা দেবে, সরকার সেভাবে সিদ্ধান্ত নেবে। একটা কুচক্রী মহল কোটাবিরোধী আন্দোলন থেকে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। একই সঙ্গে বলা হয়েছে, সর্বোচ্চ আদালতের প্রক্রিয়া সমাপ্ত না করে সরকার এ বিষয়ে কিছুই করতে পারবে না।
নতুন কর্মসূচি
কোটা সংস্কার আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি হিসেবে আজ রবিবার গণপদযাত্রা ও সংসদে জরুরি অধিবেশন ডেকে কোটার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
কর্মসূচি ঘোষণাকালে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, রবিবার (আজ) বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে এই গণপদযাত্রা শুরু হবে। গণপদযাত্রা করে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে গিয়ে সেখানে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। গণপদযাত্রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, সাত কলেজ, শেরেবাংলা কলেজসহ ঢাকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অংশ নেবে। এ ছাড়া অন্যান্য জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও নিজ নিজ জেলা প্রশাসক কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা নিয়ে একই দাবিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দেবেন।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৮ সালে ব্যাপক ছাত্র আন্দোলনের মুখে সরকার নবম থেকে ত্রয়োদশ গ্রেডের চাকরি থেকে সব ধরনের কোটা বাতিল করেছিল। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ কোটাও বাতিল হয়। গত ৫ জুন মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। এর পর কোটা বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়। কোটাবৈষম্য নিরসনে শুরুতে চার দফা দাবি থাকলেও পরে কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনসহ অবরোধ কর্মসূচি পালন আসছিলেন শিক্ষার্থীরা।
সরকারের পক্ষ থেকে যা বলা হচ্ছে
‘কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের দাবি ও অনেক বক্তব্য সংবিধান ও রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির বিরোধী’ উল্লেখ করে গতকাল শনিবার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপিল বিভাগের রায়ের আগে সরকার কোটা পরিবর্ধন-পরিমার্জন নিয়ে কিছু করবে না।’ তিনি বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে কোটার বিষয়টি বিচারাধীন, আইনের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে কোটার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। একটা কুচক্রী মহল কোটাবিরোধী আন্দোলন থেকে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছে।’ তিনি বলেন, ‘গত কয়েকটি বছর কোটা না থাকায় নারীদের অংশগ্রহণ হতাশাজনক। পিছিয়ে পড়েছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীও। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্য বাংলাদেশে কোটায় নিয়োগ সবচেয়ে কম। ভারতের ৬০ শতাংশ, পাকিস্তানের ৯২ দশমিক ৫ শতাংশ, নেপালে ৪৫ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় ৫০ শতাংশ চাকরিতে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে ৬০ শতাংশ কোটা চালু রয়েছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘সরকার শিক্ষার্থীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়েই কোটা বাতিল করেছিল, আদালত সেটি পুনর্বহাল করেছিল। সুতরাং কোটা সমাধান আদালতের মাধ্যমেই হতে হবে। এই বিষয়টি যারা বোঝেন না বা বুঝেও বুঝতে চান না বা যাদের বিএনপিসহ অন্যরা ইন্ধন দিচ্ছে, তাদের বলব, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করবেন না।’ গতকাল সন্ধ্যায় বগুড়া শহরে এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র, আ, ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি গতকাল মাদারীপুরের শিবচরের কাঠালবাড়িতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে বলেন, ‘কোটা পদ্ধতি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ একটি রায় দিয়েছে। সেই রায়ে বলা হয়েছে যে, কোটা কম বা বাড়ানো এটা সরকার করতে পারবে। আমরা মনে করি যে, কোটা সংরক্ষণও যেমন প্রয়োজন আছে, তেমনি অযৌক্তিকভাবে যে সকল কোটা সংরক্ষণ করা আছে, সেগুলোকে যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসা প্রয়োজন। সেজন্য আমরা কাজ করছি, কাজ করব। আমাদের সংবিধানেও কোটার কথা বলা আছে। অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর অগ্রসরতার জন্য কোটার প্রয়োজন আছে।’
মুক্তিযোদ্ধাদের কোটার ব্যাপারে মন্ত্রী বলেন, ‘এখন আর মুক্তিযোদ্ধাদের নিজের জন্য কোটার প্রয়োজন নেই। তাদের সন্তানরাও কোটার বাইরে চলে গেছে। এখন অন্যদের দেওয়া হবে কিনাÑ এ ব্যাপারে আদালত যে নির্দেশনা দেবে সেভাবে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে।’
কোটা নিয়ে আন্দোলনকারীদের দাবি পরিবর্তন কেন? Ñএই প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। গতকাল শনিবার বিকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রতিমন্ত্রী এই প্রশ্ন উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগ তথা সরকার যখন আদালতে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মীমাংসার পথে এগোচ্ছে, তখন আন্দোলনকারীরা আবার তাদের দাবি পরিবর্তন করে বলছে, বিচার বিভাগ নয়, নির্বাহী বিভাগের মাধ্যমে সমাধান চায়। অথচ, সর্বোচ্চ আদালতের প্রক্রিয়া পুরোপুরি সমাপ্ত না করে সরকার এ বিষয়ে কোনো কিছুই করতে পারবে না। এ বিষয়ে কোনো ঘোষণাও দিতে পারবে না।’
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ গতকাল দুপুরে মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আন্দোলনে অনুপ্রবেশকারী ঢুকেছে কি না, ঘটনাটি অন্যদিকে ধাবিত করার চেষ্টা চলছে কি নাÑ এসব নিয়ে ডিবির টিম ও থানা-পুলিশ কাজ করছে। কেউ যদি হাইকোর্টের নির্দেশনা না মেনে আন্দোলনের নামে সড়ক অবরোধ করে গাড়িতে হামলা ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে, তবে ধরে নিতে পারি অনুপ্রবেশকারীরাই এসব কাজ করছে।’
অজ্ঞাত অনেক শিক্ষার্থীকে আসামি করে মামলা
কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা করা হয়েছে। গত শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের পরিবহন বিভাগের গাড়িচালক খলিলুর রহমান বাদী হয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এতে অজ্ঞাতপরিচয় ‘অনেক শিক্ষার্থীকে’ আসামি করা হয়। এতে পুলিশের যানবাহন ভাঙচুর, পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা এবং মারধরের অভিযোগ আনা হয়।
গতকাল শাহবাগ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. আরশাদ হোসেন বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ এনে একটি মামলা হয়েছে। এ ছাড়া, সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় তারা বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘মামলার আসামির তালিকায় কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। গত বৃহস্পতিবার কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় অজ্ঞাত ব্যক্তিরা পুলিশের একটি গাড়ির ক্ষতি করেছে। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তদন্ত সাপেক্ষে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজাহারে খলিলুর রহমান উল্লেখ করেন, ‘গত বৃহস্পতিবার কোটা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি ছিল। সে অনুযায়ী প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে অজ্ঞাতপরিচয় ছাত্ররা জড়ো হয়ে বিভিন্ন হল প্রদক্ষিণ করেন। পরে বিকাল ৪টার সময় স্লোগান দিতে দিতে শাহবাগ মোড়ের দিকে এগোতে থাকেন। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড় অতিক্রম করে বেআইনি জনতায় আবদ্ধ হয়ে দাঙ্গা সৃষ্টি করে সরকারি দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি করেন। তারা শাহবাগ মোড়ে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেন ও কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের মারধর করে জখম করেন। পরে তারা হোটেল ইন্টার-কন্টিনেন্টালের দিকে অগ্রসর হতে থাকলে পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তারা ছাত্রদের বুঝিয়ে-শুনিয়ে আবারও শাহবাগ মোড়ে ফিরিয়ে আনতে যান। এ সময় তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পাশে নিরাপদ স্থানে রাখা এপিসি-২৫ ও ওয়াটার ক্যাননের চারদিকে ঘেরাও করে এবং ওপরে উঠে উদ্দাম নৃত্য শুরু করেন। তারা ওয়াটার ক্যানন চালককে গাড়ি থেকে জোর করে বের করার চেষ্টা ও গতিরোধ করেন। তারা এপিসি ২৫-এর সামনের দুটি এসএস স্ট্যান্ড, বনেটের ওপর বাম পাশের রেডিও অ্যান্টেনা এবং ডান পাশের পেছনের চাকার মার্টগার্ড এবং ওয়াটার ক্যাননের বাম পাশের লুকিং গ্লাস ভেঙে আনুমানিক ৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি করেন। এ বিষয়ে শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। এ সময় সিনিয়র স্যাররা (পুলিশ কর্মকর্তারা) ছাত্রদের বুঝিয়ে-শুনিয়ে এপিসি-২৫ ও ওয়াটার ক্যানন থেকে নামিয়ে আনেন এবং পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে পানির বোতল, টেপ-টেনিস বল ও ইটের টুকরা ছুড়ে মারেন। এতে অনেক পুলিশ সদস্য আঘাতপ্রাপ্ত হন।’
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, ‘একপর্যায়ে অজ্ঞাতপরিচয় ছাত্ররা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শাহবাগের আন্দোলনে যোগ দেন। তারা বারডেম হাসপাতালের গেটের ব্যারিকেড ভেঙে পুলিশ সদস্যদের আহত করেন। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে এবং শাহবাগ থানায় ছাত্রদের ধরে নিয়ে যাওয়া হযেছে, এসব গুজব ছড়িয়ে তারা পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টা করেন। তারা পুলিশকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে শাহবাগ মোড় ত্যাগ করেন।’
গতকাল মামলাটির এজাহার আদালতে পেশ করা হয়। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আলী হায়দার চৌধুরীর আদালত এজাহার গ্রহণ করে আগামী ২১ আগস্ট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ধার্য করে দেন।
ছাত্রলীগের ‘পলিসি অ্যাডভোকেসি’ ও ‘ডোর টু ডোর’ ক্যাম্পেইন
সরকারি চাকরিতে কোটা ইস্যু নিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রস্তাবনা সংগ্রহ, বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংবলিত লিফলেট বিতরণ, উন্মুক্ত আলাপন, যৌক্তিক উপায় গ্রহণ এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয় এমন কর্মসূচি পরিহার করার জন্য ‘পলিসি অ্যাডভোকেসি’ ও ‘ডোর টু ডোর’ ক্যাম্পেইন শুরু করেছে ছাত্রলীগ।
গতকাল সন্ধ্যায় ছাত্রলীগ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এর আগে দুপুরে সংগঠনটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই বিষয়টি জানানো হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে মিট দ্য প্রেসে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘প্রফেশনাল আন্দোলনকারীরা এখনও রাজপথে আছে। তারা ব্লকেড ব্লকেড খেলা খেলছে। ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহাল রাখার পরও তারা আন্দোলন করছে। তারা কি চাকরিজীবী হতে চায় নাকি আন্দোলনজীবী হতে চায়?’
কোটার বিষয়ে প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে উল্লেখ করে সাদ্দাম বলেন, ‘নারীদের সামনে আনতে তাদের কোনো কথা নেই। ২০১৮-এর পর কোটা না থাকায় নারীদের অংশগ্রহণ কমেছে। কমেছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের সংখ্যাও। বেশ কয়েকটি জেলার মানুষ চাকরিই পায়নি। তা ছাড়া ২০১৮ সালে আন্দোলনকারীদের একজনও বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি।’
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, ‘কোটার নামে মানুষের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করা হয়েছে। আমরা হলে হলে গিয়ে সঠিক বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করব। কেউ যাতে এতে জড়িয়ে নিজের ভবিষ্যৎ নষ্ট না করে, সে বিষয়ে আমরা সতর্ক করব।’