কোটা আন্দোলন
নতুন কর্মসূচি দিয়ে শাহবাগ ছাড়লেন আন্দোলনকারীরা
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৪, ০৭:১৬ পিএম
নতুন কর্মসূচি দিয়ে শাহবাগ ছাড়লেন আন্দোলনকারীরা
কোটা সংস্কার আন্দোলনে ঘোষিত এক দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। শনিবার (১৩ জুলাই) সারাদেশে সংগঠনটির সমন্বয়কদের নিয়ে অনলাইন-অফলাইনে প্রতিনিধি বৈঠক করা হবে।
শুক্রবার (১২ জুলাই) বিকেল সোয়া ৬টায় রাজধানীর শাহবাগে গতকালের বাংলা ব্লকেডে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার।
কর্মসূচি অনুযায়ী শনিবার সারাদিন দেশব্যাপী প্রতিনিধি বৈঠক করবে সংগঠনটি। একইসঙ্গে পূর্বে ঘোষিত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচিও চলমান থাকবে। পরবর্তীতে বিকেল ৬টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে সংবাদ সম্মেলন করবেন তারা।
তিনি বলেন, সারাদেশে আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর যে হামলা হয়েছে আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাই। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলা হয়েছে। পুলিশ এক সাংবাদিককে লাঠি দিয়ে আঘাত করে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। আমরা এই হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাই।
বাকের বলেন, আমরা আগামীকাল শনিবার সারাদেশের আন্দোলন সমন্বয়কদের সাথে অনলাইন, অফলাইনে বৈঠক করে সমন্বয় করবো। পাশাপাশি গণসংযোগ চলমান থাকবে। সবশেষে সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সার্বিক বিষয়ে একটি প্রেস ব্রিফিং করবো।
এর আগে বিকেল সোয়া ৪টায় ঢাবির কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে এই বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে বিকেল সোয়া ৫টায় শাহবাগে জড়ো হন।
এর আগে গতকাল বিকেল ৫টার দিকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের চলমান কোটা বিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান নেন। কোটাবিরোধীদের ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির ফলে রাজধানীর পল্টন, প্রেস ক্লাব, শাহবাগ, ফার্মগেট, বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার, সায়েন্স ল্যাব, আগারগাঁওসহ রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করলে যানবাহন ও যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন। তবে রাত ৮টার দিকে আন্দোলনকারীরা অবরোধ তুলে নিলে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাতজন। গত ৫ জুন সেই আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্ট বেঞ্চ কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়। এরপর থেকেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নতুন করে আন্দোলনে নামেন চাকরিপ্রত্যাশী তরুণরা। প্রথম কয়েক দিন মিছিল, মানববন্ধনের মত কর্মসূচি থাকলেও এ সপ্তাহের শুরু থেকে শুরু হয় তাদের অবরোধ কর্মসূচি, যার নাম তারা দিয়েছে ‘বাংলা ব্লকেড’।
‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে আন্দোলনকারীরা শুরুতে চার দফা দাবিতে বিক্ষোভ করলেও পরে মাঠে নামেন এক দফা নিয়ে। তাদের দাবি হল- সব গ্রেডে সব ধরনের ‘অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক’ কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ‘ন্যূনতম পর্যায়ে’ এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতিকে সংশোধন করতে হবে।