
প্রিন্ট: ১৮ মার্চ ২০২৫, ০৪:১২ এএম
আয়নাঘর পরিদর্শন শেষে তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরলেন প্রধান উপদেষ্টা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:০৬ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
আয়নাঘর পরিদর্শন শেষে নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) আয়নাঘর ঘুরে দেখার পর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি সেখানে ঘটে যাওয়া বর্বরতার চিত্র প্রকাশ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ড. ইউনূস বলেন, "অবস্থা এতটাই নৃশংস যে, শুনলেও অবিশ্বাস্য মনে হয়। এটা কি সত্যিই আমাদের সমাজ? আমাদের দেশের মানুষই কি এমন কাজ করেছে? যারা এ নির্মমতার শিকার হয়েছে, তারা আমাদের সঙ্গেই আছে। তাদের মুখ থেকে শোনার পর আমি স্তব্ধ।"
তিনি আরও বলেন, "পূর্ববর্তী সরকার দেশে এক ধরনের 'আইয়ামে জাহেলিয়াত' প্রতিষ্ঠা করেছিল, যার অন্যতম প্রমাণ এই আয়নাঘর।"
প্রধান উপদেষ্টা জানান, এমন টর্চার সেল শুধু আয়নাঘরেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং সারা দেশজুড়ে এর অস্তিত্ব রয়েছে। তিনি বলেন, "আমার ধারণা ছিল আয়নাঘরের সংখ্যা সীমিত, কিন্তু আজ জানতে পারলাম, সারা দেশে এমন শত শত স্থান রয়েছে। কেউ বলছে ৭০০, কেউ বলছে ৮০০—ঠিক কতটি রয়েছে, তা নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি।"
ড. ইউনূস আরও বলেন, "গুম কমিশনের প্রতিবেদনে আয়নাঘরের তথ্য সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক করা হবে। যারা এসব নির্মম কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। সকল তথ্য-প্রমাণ সিলগালা করে রাখা হবে এবং তা আদালতে উপস্থাপন করা হবে।"
এর আগে, বুধবার সকালে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমকর্মী ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে নিয়ে আয়নাঘর পরিদর্শনে যান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে তিনি প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে তাদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার বিবরণ শোনেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষকে গোপনে তুলে নিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে আটকে রাখা হতো। সুইডেনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নেত্র নিউজের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এই গোপন বন্দিশালাগুলোর বিষয়টি প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে আসে, যেখানে ‘আয়নাঘর’ নামটি সামনে আসে।
গুম হওয়া অনেক ব্যক্তি শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পরিবারের কাছে ফিরে আসেন। তাদের বর্ণনায় উঠে আসে আয়নাঘরের ভয়াবহতা ও নির্মম নির্যাতনের চিত্র।