
প্রিন্ট: ১৬ মার্চ ২০২৫, ০৩:৩১ পিএম
মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রতিরোধে সংস্কার কমিশনের সুপারিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:০৪ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রতিরোধে একটি বাস্তবসম্মত আইন প্রণয়নের প্রস্তাব দিয়েছে। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে কমিশনের প্রতিবেদন হস্তান্তর করা হয়।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশনের প্রধান, সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, এই প্রতিবেদন তুলে দেন। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে গণমাধ্যমে সংস্কার প্রস্তাবের সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়। ২৮ দফা সুপারিশের মধ্যে ২৫ নম্বর দফায় স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস গঠনের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রতিরোধের সুপারিশসমূহ-
প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে যে, মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা বন্ধে একটি কার্যকর আইন প্রণয়নের জন্য গভীর গবেষণা ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সাথে আলোচনা করা প্রয়োজন।
প্রস্তাবনায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে:
ফৌজদারি কার্যবিধির সংশোধন: ফৌজদারি কার্যবিধির ২৫০ ধারার অনুরূপ বিধান ২৩ অধ্যায়ে (দায়রা আদালতে বিচার) সংযোজন করা। এছাড়া, মিথ্যা মামলার জন্য বিদ্যমান জরিমানা ও ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বৃদ্ধি করা।
অযৌক্তিক গ্রেপ্তার প্রতিরোধ: কোনো মামলায় সন্দেহজনকভাবে অস্বাভাবিক সংখ্যক আসামির নাম থাকলে এবং অপরাধে তাদের সুনির্দিষ্ট ভূমিকা উল্লেখ না থাকলে, পুলিশ যেন ওই ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার না করে, সে বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা জারি করা।
গ্রেপ্তারকৃতদের জামিনের সুযোগ: মিথ্যা বা হয়রানিমূলক মামলায় যদি কোনো আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে, তবে পাবলিক প্রসিকিউটর, কোর্ট ইন্সপেক্টর বা কোর্ট সাব-ইন্সপেক্টর আদালতে জামিনের বিরোধিতা করবে না। এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় থেকে পাবলিক প্রসিকিউটরদের জন্য নির্দেশনা জারি করা হবে।
আইনজীবীদের আচরণবিধি: কোনো আইনজীবী বিচার কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করলে, যেমন— ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশের বিরুদ্ধে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা, তাকে হুমকি দেওয়া বা চাপ প্রয়োগ করা— তবে তার বিরুদ্ধে পেশাগত আচরণ লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হবে। বার কাউন্সিলের মাধ্যমে আইনজীবীদের এ বিষয়ে সতর্ক করা হবে।
দ্রুত তদন্ত ও নিরীহ ব্যক্তিদের মুক্তি: ইতোমধ্যে দায়ের হওয়া মামলা দ্রুত তদন্ত শেষ করে নির্দোষ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার বা চার্জশিট থেকে অব্যাহতি প্রদানের নির্দেশনা দেওয়া হবে।
টাস্কফোর্স গঠন: প্রকৃত অপরাধীদের যেন পুলিশের সাথে যোগসাজশের মাধ্যমে মামলা থেকে মুক্তি না মেলে, সে জন্য প্রতিটি বিভাগে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হবে।
এই সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দায়েরের প্রবণতা রোধ করা সম্ভব হবে এবং বিচার ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।